ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশে শারদীয়া দুর্গোৎসব এলেই সংখ্যালঘুদের রক্তচাপ বেড়ে যায় আতঙ্কে। শেখ হাসিনার জামানার অবসানের পর বহু জায়গায় আক্রান্ত হিন্দুরা। সেই ক্ষত এখনও শুকোয় নি। দুর্গাপুজো নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্যবারের চেয়ে এই বছর বেশি আশঙ্কায় বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়। যদিও পুজো নির্বিঘ্ন রাখতে সবরকমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে মহম্মদ ইউনূসের সরকার। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন চোখে পড়ছে না বলে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সংগঠনগুলির নেতাদের তরফে অভিযোগ। দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার সবথেকে বড় ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রাম শহরে। যা নিয়ে ফেসবুকে মহম্মদ ইউনূসের সরকার ও ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের ধুয়ে দিলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের রহমতগঞ্জ এলাকার জেএম সেন হলের পুজো মন্ডপে ইসলামিক সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন ছয় যুবক। পুজো মন্ডপে ইসলামিক সঙ্গীত পরিবেশনের একাধিক ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই বাংলাদেশ জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়। গান গেয়ে দ্বীন ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিয়েছেন ওই শিল্পীরা। কীভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসবে হাজির হয়ে মঞ্চ থেকে প্রকাশ্যে ধর্মান্তরণের বার্তা দেওয়ার সাহস পান তাঁরা, এই প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু মহলেই। বিপাকে পড়ে ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে মহম্মদ ইউনূসের সরকার। এই ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের পুজোর আসরে ইসলামিক সঙ্গীত পরিবেশনের খবর কানে যাওয়া মাত্রই প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন নির্বাসিত বাংলাদেশী লেখিকা তসলিমা নাসরিন। ঘটনার ভাইরাল ভিডিও শেয়ার করে তসলিমা লিখেছেন-
“মাত্র তিন/চার দিনের দুর্গা পুজো। বাংলাদেশে এই কটা দিনও শান্তিতে হিন্দুদের পুজো করতে দেয় না মুসলমানেরা। প্রতিমা ভাঙবে, মন্দিরে আগুন দেবে, ঢাক বাজাতে দেবে না, মাইক বাজাতে দেবে না। এবার তো মণ্ডপের সামনে সেনাবাহিনী বসানো হয়েছে। মূলত দুনিয়াকে দেখানোর জন্য যে তারা হিন্দুবিদ্বেষী নয়। আজ চট্টগ্রাম মহানগরের পুজোর অনুষ্ঠানে গান গাইছে কতগুলো জিহাদি। ইসলামের গান গাইছে। তারা কি ভেবেছে, নামাজ চলাকালীন মসজিদের ভেতর যদি হিন্দুরা জোরে সোরে কীর্তন গাইতে থাকে, তাহলে কেমন লাগবে মুসলমানদের? তারা কি ভেবেছে, তাদের ইসলামী জলসায় যদি হরে কৃষ্ণ হরে রাম গায় এক দল হিন্দু? না, মুসলমানরা, আমি লক্ষ্য করেছি, কখনও তাদের কীর্তিকলাপের বিপরীত দিকটা চিন্তা করে না। চিন্তা করলে শিউরে উঠবে নিশ্চয়ই। মুসলমানদের মতো এত অভদ্র, এত অশ্লীল, এত অশিষ্ট, এত অসভ্য জাত বোধহয় আর হয় না।”
Feature graphic is representational and designed by NNDC.