আরজি কর কান্ড: পুলিশ কিনারা করতে না পারলে তদন্তভার সিবিআইকে, বলতে বাধ্য হলেন মমতা

আরজি কর কান্ড: পুলিশ কিনারা করতে না পারলে তদন্তভার সিবিআইকে, বলতে বাধ্য হলেন মমতা


শুক্রবার সকালে আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে ৩১ বছরের ওই মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তিনি আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ সঞ্জয় রায় নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও আরও অনেকেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। আসল দুষ্কৃতীদের আড়াল করতে সঞ্জয়কে বলির পাঁঠা করা হয়েছে বলেও‌ পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে গেছে। ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও জড়িত সকলকে গ্রেফতারের দাবিতে আরজি কর সহ রাজ্যের সমস্ত মেডিকেল কলেজে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।

মৃতার সুরতহাল রিপোর্টে যা এসেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই অনুমান করছেন, তাঁকে গণধর্ষণ করার পর খুন করা হয়েছে। অথচ জানাজানি হ‌ওয়ার পর ঘটনাটিকে প্রথমে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করেছিল পুলিশ ও আরজি কর কর্তৃপক্ষ। আর জি কর মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগের চার তলায় বৃহস্পতিবার (৮ অগাস্ট) রাতে কারা মহিলা চিকিৎসককে গণধর্ষণের পর খুন করতে পারে, এখন এই প্রশ্নেই তোলপাড় রাজ্য। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রকৃত দোষীদের আড়াল করতে চাইছে সরকার। এখন মুখ্যমন্ত্রীও বলছেন, আরজি করের ভেতরেই কেউ কেউ ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে।

ভিডিও: আরজি করের মৃত মহিলা চিকিৎসকের বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি মমতা। সংগৃহীত ভিডিও

সোমবার আরজি করে খুন হ‌ওয়া মহিলা চিকিৎসকের উত্তর ২৪ পরগনার বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাইরে বেরিয়ে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাবা-মায়ের অভিযোগ, আরজি করের ভেতরেই কেউ আছে ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে।” মৃত চিকিৎসকের বন্ধু ও সহকর্মীদের‌ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “দরকারে ওঁর বন্ধুবান্ধবকে ডেকে কথা বলুন।‌ যিনি ফোন করে সেদিন খবর দিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গেও কথা বলতে হবে। কাউকে ছাড়া হবে না।” মমতা আর‌ও বলেন, “কীভাবে মেরেছে! এর দ্রুত বিচার করতে হবে। আমরা ফাঁসি চাইব। তাই ফাস্টট্র্যাক আদালতে তোলার কথা বলেছি। যাতে দ্রুত বিচার হয়।” আরজি করের জরুরি বিভাগের সুরক্ষিত বলয়ের ভেতরে কীভাবে একজন মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করার পর খুন করা হল, তা নিয়ে বিস্মিত মুখ্যমন্ত্রীও। তিনি বলেন, “আমি আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি, কীভাবে অত্যাচার করে মারা হয়েছে, তা ভেবে। ওখানে নার্সরা ছিলেন, সিকিউরিটিও ছিলেন। কিন্তু কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা এখনও বুঝতে পারছি না।”

আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার জট পুলিশ খুলতে ব্যর্থ হলে তদন্তের ভার সিবিআইকে দিতেও রাজি মমতা। তিনি বলেন, “পুলিশ যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত শেষ করুক। আমি চাই, যে বা যারা জড়িত, তাদের যত দ্রুত সম্ভব গ্রেফতার করা হোক। ভিতরেও হয়তো অনেকে আছে। রবিবারের (১৮ অগাস্ট) মধ্যে পুলিশ তদন্ত শেষ না করতে পারলে তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হবে।”

Feature image- NNDC.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *