ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: ব্রিটেনে পালা বদল। পার্লামেন্ট নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিপর্যয় রক্ষণশীলদের। প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক জিতলেও রীতিমতো ধস নেমেছে দলের আসন সংখ্যায়। ৬৫০ সদস্যের হাউস অব কমন্সে ৪১২ টি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসতে চলেছে লেবার পার্টি। লেবার পার্টি চারশ পার করবে, জনমত জরিপে তেমন আভাস মিলেছিল। জনমত জরিপকে সত্য প্রমাণ করে ব্রিটেনের ইতিহাসে রেকর্ড সৃষ্টি করা জয় শ্রমিক দলের। পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন সুনক। ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন লেবার পার্টির প্রধান কিয়ের স্টার্মার। ১৪ বছর পর ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে লেবার পার্টির প্রধানমন্ত্রী ফিরতে চলেছেন। ৬১ বছরের কিয়ের স্টার্মার ‘হলবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাস’ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।
ভোট এবং আসন- দুটোই প্রায় তলানিতে রক্ষণশীল দলের। ২৫১টি আসন খুইয়ে কমন্সে টোরিদের শক্তি নেমে গেছে মাত্র ১২১-এ। রক্ষণশীলরা ভোট পেয়েছে ২৩.৭৪ শতাংশ। প্রায় ২০ শতাংশ ভোট হারিয়েছে ঋষি সুনকের দল। লেবার পার্টি পেয়েছে ৩৩.৮৩ শতাংশ ভোট। শ্রমিক দলের ভোট বেড়েছে ১.৭১ শতাংশ। আসন বেড়েছে ২১৪টি। নাটকীয় উত্থান নতুন রাজনৈতিক দল রিফর্ম পার্টির। ২০১৮ সালে গঠিত কট্টর দক্ষিণপন্থী এই দলটি মাত্র চারটি আসন জিতলেও ভোট পেয়েছে ১৪.২৫ শতাংশ। মোট ৪০ লক্ষ ৯১ হাজার ৫৪৯টি ভোট পেয়েছে রিফর্ম পার্টি। রক্ষণশীলদের ভোটের একটি বড় অংশ নাইজেল ফারাজের রিফর্ম পার্টি কব্জা করে নিয়েছে বলে মনে করছে ব্রিটেনের রাজনৈতিক মহল।
বড় সাফল্য এসেছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিরও। ভোট মাত্র ০.৬৪ শতাংশ বাড়লেও কমন্সে লিবারেলদের আসন ৮ থেকে বেড়ে ৭১। ৬৫০ আসনের হাউস অব কমন্সে ম্যাজিক ফিগার ৩২৬। লেবার পার্টির দখলে ৪১২। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকেও ৮৬টি বেশি পেয়েছে স্টার্মারের দল। টানা ১৪ বছর ব্রিটেনের ক্ষমতায় রক্ষণশীলরা। দলের ভেতরে কোন্দল চরমে। পাঁচ বছরে তিনবার প্রধানমন্ত্রী বদল হয়েছে কনজারভেটিভ দলের সরকারে। অর্থনীতিতে মন্দা। জীবনযাত্রার খরচ বহুগুণ বেড়ে গেছে নাগরিকদের। অভিবাসন সমস্যা নিয়ে ব্রিটেনের নাগরিক সমাজ আড়াআড়ি বিভক্ত বলা চলে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে দিন কে দিন। অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় মানুষ শঙ্কিত। এইসব কারণে রক্ষণশীলদের থেকে ভোটাররা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
Feature graphic is representational and designed by NNDC.