অবশেষে নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করল কেন্দ্র, ক্ষিপ্ত মমতা, মতুয়ারা উল্লসিত

অবশেষে নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করল কেন্দ্র, ক্ষিপ্ত মমতা, মতুয়ারা উল্লসিত


নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আইনে পরিণত হয়ে যাওয়ার পরেও এতদিন পর্যন্ত তা কার্যকর করার কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করে নি কেন্দ্রীয় সরকার।‌ নিয়ম অনুযায়ী কোন‌ও আইন তৈরি হয়ে যাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে তা গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ধারা-উপধারা সহ কার্যকর করতে হয়। অন্যথায় সংসদের কাছে বিজ্ঞপ্তি জারির সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন জানাতে হয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রককে। দ্বিতীয় রাস্তা অবলম্বন করে গত চার বছর ধরে দফায় দফায় সংসদের কাছ থেকে সিএএ কার্যকর করার সময়সীমা বাড়িয়ে নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

নাগরিকত্ব আইন লাগু করার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের উপরে একটা চাপ ছিল‌ই। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায় বারেবারে আইনটি কার্যকর করার দাবি জানিয়ে আসছিল। নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুদের ভারতের নাগরিকত্ব প্রদানের আশ্বাস দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। এই আশ্বাসের কারণেই উনিশের লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া জনগোষ্ঠীর মানুষ বিজেপিকে ঢেলে ভোট দিয়েছিলেন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনেও তারা বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন নি। সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের সঙ্ঘাধিপতি বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বানানো হলেও সিএএ আইনের বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে রাখায় মতুয়াদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছিল। তবে লোকসভা নির্বাচনের আগে সিএএ যে কার্যকর হচ্ছেই, সেই আভাস‌ও দিয়ে রেখেছিলেন মোদী-শাহ। অবশেষে নির্বাচন কমিশন লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করার আগেই নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি জারি করে ফেলল কেন্দ্র।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সহ ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যে মানুষেরা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সময়সীমার মধ্যে নির্যাতিত হয়ে ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। বিজ্ঞপ্তি জারি হ‌ওয়ার পর জানা যাচ্ছে, সিএএ আইনে নাগরিকত্ব প্রদানের পুরো প্রক্রিয়াটিই অনলাইনে সম্পন্ন হবে। নাগরিকত্বের আবেদন জানানোর জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে পৃথক একটি পোর্টালে খোলা হয়েছে। সেই পোর্টালে লগ‌ইন করে আবেদনকারীকে জানাতে হবে, তিনি কবে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

সিএএ কার্যকরের বিজ্ঞপ্তি জারির সাথেই সাথেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি রাজ্যে এই আইন কার্যকর হতে দেবেন না।‌ যদিও নাগরিকত্ব সংক্রান্ত যাবতীয় আইন কার্যকর করার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত থাকায় এই ব্যাপারে রাজ্যের করণীয় বলতে কিছুই নেই। তাছাড়া যে কোনও কেন্দ্রীয় আইন কার্যকর করতে ভারতের প্রত্যেকটি অঙ্গরাজ্য সাংবিধানিকভাবে বাধ্য। কাজেই রাজনৈতিক কারণে মমতা হুঙ্কার ছাড়লেও তা নেহাতই ফাঁকা আওয়াজ ছাড়া আর কিছু নয়।

Feature graphic is representational and created by NNDC.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *