মনোনয়নে, ভোটে বাধা এলে পাল্টা প্রতিরোধ- নন্দীগ্রামে হুঁশিয়ারি বিরোধী দলনেতার
নন্দীগ্রাম: “আক্রমণ হলে প্রতিরোধ হবে, আমার আত্মরক্ষার অধিকার আছে”- মঙ্গলবার পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বের চতুর্থ দিনে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিন নিজের বিধানসভা ক্ষেত্রের বিজেপি প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার মিছিলে নেতৃত্ব দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।রেয়াপাড়ায় নন্দীগ্রাম-২ নম্বর ব্লক অফিসে মনোনয়ন জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ঠাকুরচক থেকে যাত্রা শুরু করেন ১১৬ জন বিজেপি প্রার্থী। প্রার্থীদের সঙ্গে ছিলেন কয়েক হাজার উৎফুল্ল কর্মী-সমর্থক। মিছিলের নেতৃত্ব দিয়ে পুরো পথ হাঁটেন শুভেন্দু।
পঞ্চায়েতে শুভেন্দুর ‘নো ভোট টু মমতা’
গ্রামীণ ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হলে নন্দীগ্রাম থেকে তৃণমূল ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাবে বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১২টিই বিজেপির দখলে যাবে বলে মনে করেন তিনি। মিছিলে হাঁটতে হাঁটতেই বিরোধী দলনেতা বলেন, “যেখানেই অবাধ ভোট হবে, সেখানেই তৃণমূল হারবে। চোরেদের লোক সাফ করবে। গ্রাম রেডি। গ্রাম একেবারে রেডি।” জনতার মিছিল থেকে তখন স্লোগান উঠছিল, ‘চোর ধরো, জেলে ভরো।’
রাজ্যে ‘নো ভোট টু মমতা’ আওয়াজ তুলে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। পঞ্চায়েত ভোটে মানুষ ‘নো ভোট টু মমতা’ করে দেবে বলে জানান নন্দীগ্রামের বিধায়ক। তবে মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে ব্লকে ব্লকে গোলমাল। ভোটপর্বের শুরুতেই এই যখন পরিস্থিতি; তখন ভোটের দিন সন্ত্রাসের মুখে মানুষ বুথে গিয়ে ভোট দিতে না পারলে কী হবে? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে শুভেন্দু বলেন, “আমার গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। আমি ভোটে লড়ব। আমি প্রচার করব। ভোটার আমাকে না চাইলে আমি হারব। কিন্তু ভোটার চাওয়ার আগেই আমাকে তুমি আটকাবে! এই জিনিস চলবে না। বাধা আসলে প্রতিরোধ হবে। আমার আত্মরক্ষার অধিকার আছে।”
টাকা মেরেছে, তাই হারবে তৃণমূল
পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন তৃণমূল হারবে, নন্দীগ্রামে তাও ব্যাখ্যা করেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রামোন্নয়নের টাকা মারার জন্য ওরা হারবে। ওদের বড় ব্যবসার জায়গা হয়ে উঠেছিল পঞ্চায়েত। গিরিরাজ সিং কামানোর জায়গায় তালাচাবি লাগিয়ে দিয়েছেন।” শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, “একশ দিনের টাকা। গ্রামীণ উন্নয়ন খাতের হাজার হাজার কোটি টাকা লুঠ করেছে তৃণমূল। এক-একটা প্রধানের চারতলা পাকাবাড়ি। পাঁচটা করে গাড়ি।”
কুণালের বায়রন খোঁচা উড়িয়ে দিলেন শুভেন্দু
দিন কয়েক আগে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ কটাক্ষের সুরে বলেছিলেন, “কয়েকটা পঞ্চায়েতে বিরোধীরা জিতে গেলেও তাঁদের মধ্যে যে বায়রন বিশ্বাসের উপলব্ধি জেগে উঠবে না তা কে বলতে পারে।” বিরোধী দলের প্রার্থীরা জিতলেও পরে তৃণমূলে যোগ দেবেন- বায়রন বিশ্বাসের উদাহরণ টেনে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই কুণাল খুল্লামখুল্লা হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সাংবাদিকেরা কুণালের বায়রন খোঁচার প্রসঙ্গ তুললে পাত্তা না দিয়ে শুভেন্দু বলেন,”সে দেখা যাবে। ও সব বলে লাভ নেই। মানুষ এইসব শুনে তৃণমূলকে ভোট দেবে না।” তবে জনগণের ভোটে তৃণমূলকে হারিয়ে বিধায়ক হওয়ার পর সেই তৃণমূলেই যোগদানের মূল্য বায়রন পাবেন বলে মনে করেন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু বলেন, “জনতাকে যে অসম্মান করবে, সে-ই জনতা থেকে দূরে সরে যাবে। সাগরদিঘিতে ব্যক্তি বায়রনের লড়াই ছিল না। তৃণমূলকে হারানোর লড়াই ছিল।”
Feature image and video- source.