তারিখ পে তারিখ! অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদে ফের স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের, ২৮ এপ্রিল পরবর্তী শুনানি - nagariknewz.com

তারিখ পে তারিখ! অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদে ফের স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের, ২৮ এপ্রিল পরবর্তী শুনানি


তৃতীয় দিন মামলা উঠলে বিচারপতি চন্দ্রচূড় কী নির্দেশ দেন, এখন সেই দিকেই তাকিয়ে সবাই। দেখার অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেওয়ার হ্যাট্রিক করেন কিনা চিফ জাস্টিস অব ইন্ডিয়া!

ডেস্ক রিপোর্ট: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত ও বিলম্বিত করাই কি এখন রাজ্য সরকার ও শাসকদলের মূল লক্ষ্য? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে করা যে কোন‌ও মামলা সুপ্রিম কোর্টে গেলেই হয়ে যাচ্ছে তারিখ পে তারিখ। ডিএ থেকে দুর্নীতি- মামলা সুপ্রিম কোর্টে টেনে নিয়ে গেলেই রাজ্য সরকার পেয়ে যাচ্ছে স্থগিতাদেশ। দেশের শীর্ষ আদালত স্থগিতাদেশ দিতেই পারে। কিন্তু দফায় দফায় স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধিতে প্রশ্ন উঠেছে বাংলার সাধারণ জনগণের মনে।

প্রাথমিক ও এস‌এসসি-র নিয়োগ দুর্নীতির মামলা অত্যন্ত জটিল। শিক্ষক, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি- প্রতিটি নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। নিয়ম বহির্ভূতভাবে যে অযোগ্যরা চাকরি পেয়েছিলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে তাদের নিয়োগ রদ হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই-ইডি তদন্ত চালাচ্ছে। রোজ‌‌ই তদন্তে কিছু না কিছু অগ্রগতি হচ্ছে এবং ঘটনায় জড়িত নতুন নতুন নাম উঠে আসছে। নিয়োগ দুর্নীতির শেকড় অনেক গভীরে। শত শত কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে ইঙ্গিত পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। এখনও পর্যন্ত ধৃতদের তালিকায় থাকা সবথেকে ‘হেভিওয়েট’ নাম প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যাবিনেটে দুই নম্বর পজিশনে ছিলেন। কিন্তু পার্থর চেয়েও বড় মাথা নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ।

দু’বার শুনানি, দু’বার‌ই স্থগিতাদেশ!

এই পরিস্থিতিতে তদন্ত প্রক্রিয়া ব্যাহত করাই সরকারের লক্ষ্য বলে বিরোধীদের অভিযোগ। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ চিঠি লিখে অভিযোগ করেছিলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলতে তাঁকে চাপ দিচ্ছেন সিবিআই-ইডির আধিকারিকেরা। সেই চিঠি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। রাজ্য পুলিশকে লেখা কুন্তলের চিঠির প্রসঙ্গ মামলার শুনানিতে উঠলে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, “এই বিষয়ে প্রয়োজন মনে করলে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন সিবিআই-ইডির তদন্তকারীরা।” সিবিআই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু করার আগেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্ট অভিষেকের মামলা গ্রহণ করে এবং গত ১৭ এপ্রিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয় প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের একক বেঞ্চ। সাতদিন পর আজ সোমবার বার (২৪ এপ্রিল) ছিল মামলটির পরবর্তী শুনানি। সোমবার‌ও স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি করলেন চিফ জাস্টিস ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।

স্থগিতাদেশের হ্যাট্রিক হবে না তো?

মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী শুক্রবার (২৮ এপ্রিল)। অর্থাৎ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ থাকছে। সুপ্রিম কোর্টে এই নিয়ে দু’দিন মামলাটি উঠল। দু’দিন‌ই অভিষেকের স্বস্তি। তৃতীয় দিন মামলা উঠলে বিচারপতি চন্দ্রচূড় কী নির্দেশ দেন, এখন সেই দিকেই তাকিয়ে সবাই। দেখার অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেওয়ার হ্যাট্রিক করেন কিনা চিফ জাস্টিস অব ইন্ডিয়া! এই ধরণের অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ তদন্তের গতিকে শ্লথ করে দিচ্ছে বলেই আইনজীবী মহলের একাংশ মনে করছেন। এদিকে বাংলার মানুষ চাইছেন নিয়োগ দুর্নীতির‌ তদন্ত দ্রুত শেষ করুক ইডি-সিবিআই। বিচার বিলম্বিত হলে ন্যায় পাওয়ার সম্ভাবনা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। বারংবার সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের নির্দেশ তাই যোগ্যতা সত্ত্বেও চাকরি থেকে বঞ্চিতদের বুকে শেলের মতোই বিঁধছে।

Feature Image is representational.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *