নিজস্ব সংবাদদাতা: জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন বালাপাড়ায় কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। বর্ষবরণের সন্ধ্যায় সদর ব্লকের বালাপাড়ায় বাড়িতে ঢুকে এলাকারই পাঁচ যুবক দশম শ্রেণীর ছাত্রীকে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ। খুনের আগে ছাত্রীটিকে ধর্ষণ করা হয় বলেও পরিবারের তরফে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার সময় ছাত্রীটি বাড়িতে একাই ছিল।
সোমবার সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে অভিযুক্তদের একজনকে গ্রেফতারের কথা জানান জলপাইগুড়ি জেলার পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো। ধৃত যুবকের নাম গোপাল তন্ত্র। হৃদয় দেবনাথ, ধনঞ্জয় রায়, রাহুল তন্ত্র ও রাজু তন্ত্র নামে আরও চার অভিযুক্ত পলাতক। পুলিশ সুপার বলেন, “মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েই আমরা নির্দিষ্ট ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দিয়েছি। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্তে নেমে একজন আসামিকে গ্রেফতার করতে পেরেছি।”
ঘটনার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। রবিবার সকালে অভিযুক্ত যুবকদের বাড়িঘরও ভাঙচুর করে গ্রামবাসীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে এসপি জানিয়েছেন। এদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন মৃতের স্বজনেরা। পুলিশ ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালাতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন মৃত ছাত্রীর বাবা। মেয়েকে খুন ও ধর্ষণে জড়িতদের আড়াল করতেই পুলিশের এই চেষ্টা বলে মনে করেন তিনি। মৃতের বাবা বলেন, “এর আগেও বাড়ির ঘেরা ভেঙে ভেতরে ঢুকেছিল এই ছেলেগুলো। সেবার পঞ্চায়েতে অভিযোগ জানানোর পর সালিশি সভা বসে। সভায় ক্ষমা চাইলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এবার এরাই ফাঁকা বাড়িতে মেয়েকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও খুন করে সরে পড়ে। সকলের ফাঁসি চাই আমি।”
পুলিশের ভুমিকা নিয়ে সরব মৃত কিশোরীর মামাও। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসতে ১৫ দিন সময় লাগবে বলে মৃতের পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছে পুলিশ। “তার আগেই আইসি কীভাবে বললেন, ঘটনাটা আত্মহত্যা?” প্রশ্ন কিশোরীর মামার।
সোমবার সকালে মৃতের বাড়িতে যায় সিপিএমের একটি প্রতিনিধি দল। দলটির নেতৃত্ব দেন জেলা সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ জিতেন দাস। মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে পুলিশ দোষীদের আড়াল করতে চাইছে বলে অভিযোগ সিপিএম নেতৃত্বেরও। জিতেন দাস অভিযোগ করেন, “পুলিশ দলদাসে পরিণত হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার আগেই পুলিশ বলে দিচ্ছে ঘটনা আত্মহত্যা!” জিতেনবাবু আরও বলেন, “পুলিশ যতই চেষ্টা করুক। আমরা ঘটনা ধামাচাপা দিতে দেবো না। একজনকে গ্রেফতার করেছে। বাকি অভিযুক্তদেরও গ্রেফতার করে সঠিক তদন্ত শেষে শাস্তি দিতে হবে। নইলে ছাড়ব না।”
Video and Photo- Reporter.