বাবার মোবাইল ঘেঁটে রহস্যের কিনারা করল পুলিশ
ডেস্ক রিপোর্ট: মানুষের প্রবৃত্তি কোথায় গিয়ে নামলে খেলাচ্ছলে সুইসাইড নোট লিখিয়ে ষোলো বছরের মেয়েকে খুন করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে পারে একজন বাবা? মহারাষ্ট্রের নাগপুরে এক কিশোরীর আত্মহত্যার ঘটনার তদন্তে নেমে আসল ঘটনা জানতে পেরে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশেরও।
গত ৬ নভেম্বর নাগপুরের কালমানা এলাকার একটি বাড়ি থেকে বছর ষোলোর কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। ঘর থেকে পাঁচটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে কিশোরীটির সৎমা সহ আরও কয়েকজন আত্মীয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিশোরীর বাবাকে থানায় ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই অন্য রকম রহস্যের গন্ধ পান তদন্তকারী আধিকারিকেরা। বাবার মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে ঘেঁটে দেখতেই ঘটনার কিনারা করে ফেলেন তাঁরা।
মেয়ের গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ার মুহুর্তের ছবি বাবার মোবাইলে খুঁজে পায় পুলিশ। মেয়ে সুইসাইড নোট লিখছে- এই ছবিও মেলে বাবার মোবাইলে। তদন্তকারী আধিকারিকেরা চেপে ধরতেই সত্য বলে দেয় বাবা। পুলিশ জানতে পারে আত্মহত্যার অভিনয় করতে বলে মেয়েকে খুন করেছে বাবাই।
আত্মীয়দের উপর প্রতিশোধ নিতে নিজের অবোধ মেয়েকে ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছে বছর চল্লিশের নরাধম লোকটি। প্রথমে মেয়েকে দিয়ে পাঁচটি সুইসাইড নোট লেখায় বাবা। সুইসাইড নোট গুলিতে সৎমা, কাকা-কাকিমাকে মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয়। এরপর মেয়েকে একটি টুলের উপর দাঁড়িয়ে গলায় ফাঁস লাগানোর অভিনয় করতে বলে বাবা। মোবাইলে দৃশ্যটির ফটো তুলে নিতে ভোলে না লোকটি। মেয়েটি টুলের উপর দাঁড়িয়ে ফাঁস দিতেই টুল সরিয়ে দেয় সেই পিশাচ। ঘটনাস্থলেই শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে কিশোরীটি। ঘটনার সময় লোকটির ১২ বছর বয়সী ছোট মেয়েও ঘরে উপস্থিত ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
ঘটনা ঘটিয়েই বাড়ি থেকে সরে পড়ে ঘাতক বাবা। পরে বাড়িতে ফিরে পুলিকে ফোন করে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে বলে, কাজের জন্য বাড়ির বাইরে বেরিয়ে ছিল সে। ফিরেই মেয়েকে এই অবস্থায় দেখতে পায়। বাবার কথায় পুলিশ প্রাথমিকভাবে বিভ্রান্ত হলেও তদন্ত প্রক্রিয়া এগোতেই তদন্তকারী আধিকারিকেরা বুঝতে পারেন, ঘটনাটার পেছনে অন্য কারণ আছে। কন্যা ঘাতক বাবাকে গ্রেফতার করে আদালতে তুলেছে পুলিশ। ধৃতের প্রথম স্ত্রী ২০১৬-য় আত্মহত্যা করে। দ্বিতীয় স্ত্রীও ছেড়ে চলে গেছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
Feature image is representational.