উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য ১৪ থেকে ১৮ এসএসসি-র চেয়ারপারসন পদে ছিলেন।
কলকাতা : এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার জালে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য। সোমবার বিকেলে কলকাতার বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাট থেকে সুবীরেশকে গ্রেফতার করল সিবিআই। ধৃত সুবীরেশ ভট্টাচার্য চারবছর (২০১৪ থেকে ২০১৮) স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। নিয়োগ ঘোটালায় তাঁরও নাম জড়িয়ে যায়। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করে বাগ কমিটি। বাগ কমিটির রিপোর্টে শান্তিপ্রসাদ সিংহ-কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের পাশাপাশি সুবীরেশের দিকেও অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই ইডি হয়ে সিবিআইয়ের হেফাজতে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আগেই গ্রেফতার হয়েছেন এসএসসি-র উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিংহ। দিন কয়েক আগেই ধরা হয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কেও। বর্তমানে এই তিন মাথাই নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের অধীনে রয়েছেন। ধৃত সুবীরেশ ভট্টাচার্যকেও নিজামেই নিয়ে গিয়েছেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। মঙ্গলবার সকালে ধৃতকে আদালতে তোলা হলে সিবিআই তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইবে বলে জানা গেছে।
পার্থ-কল্যাণময়-শান্তিপ্রসাদের সঙ্গে সুবীরেশকেও মুখোমুখি বসিয়ে এবার সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা জেরা করতে চান বলে বলে মনে করা হচ্ছে। গত ২৩ অগাস্ট সকালে ইডির হাতে গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে গ্রেফতার হয় পার্থর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও। সেই থেকে জেলে পার্থ-অর্পিতা। বিচারপতির কাছে বারবার কান্নাকাটি করেও জামিন মঞ্জুর করতে ব্যর্থ প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ। সুবীরেশ ভট্টাচার্যের বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাট আগেই সিল করে দিয়েছিল সিবিআই। এরপর একবার সুবীরেশকে ফ্ল্যাটের ছাদে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে। তাঁর আমলে কোনও নিয়োগ দুর্নীতি হয় নি বলে সাফাই গেয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তবে নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে কিছু পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকতে পারে বলে স্বীকার করেছিলেন তিনি। সুবীরেশ মুখে যাই বলুন, তাঁর বিরুদ্ধে নিয়োগ ঘোটালায় জড়িত থাকার যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ সিবিআই পেয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এদিকে সোমবারই পার্থ-অর্পিতার বিরুদ্ধে আদালতে ১৭২ পাতার চার্জশিট পেশ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। দু’জনের কাছ থেকে মোট ১০৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে চার্জশিটে জানানো হয়েছে। এই বিপুল সম্পদের উৎস নিয়োগ দুর্নীতি বলেই আদালতে জানিয়েছে ইডি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের সব দায় আধিকারিকদের ঘাড়ে চাপিয়ে বাঁচতে চাইছেন। কিন্তু তদন্তের গতিপ্রকৃতি যে দিকে গড়াচ্ছে, তাতে পার্থ আরও জালে জড়িয়ে যাচ্ছেন বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
Feature image is representational.