অন্যান্য রাজ্যে ওয়ান থেকেই ক্লাস চালু হলেও বাংলায় কেন নয় ? প্রশ্ন শিক্ষক মহলের। প্রাথমিক,উচ্চ প্রাথমিকে ক্লাস শুরুতে বিলম্ব পড়ুয়াদের বড় অংশের ভিত সারা জীবনের মতো দুর্বল করে দেবে বলে আশঙ্কা শিক্ষাবিদদের।
ডেস্ক রিপোর্ট : সোমবার থেকেই সমস্ত স্কুল-কলেজ খুলে গেল কর্নাটকে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে যাচ্ছে তামিলনাড়ু, হরিয়ানা, রাজস্থান এবং মহারাষ্ট্রেও। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলায় স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় চালু হলেও বন্ধই থাকছে প্রাথমিকের পড়াশোনা। সোমবার নবান্নে রাজ্যে স্কুল-কলেজ খোলার কথা ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,” ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হচ্ছে। সরস্বতী পুজো উপলক্ষে ৪-৫ তারিখ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পঠনপাঠন বন্ধ থাকবে। তবে পুজোর প্রস্তুতি সারতে তিন তারিখ স্কুল-কলেজে আসতে পারবে পড়ুয়ারা। “ স্কুলে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস চালু হলেও পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস এখনই শুরু হচ্ছে না। এই তিন শ্রেণির জন্য বিকল্প পাড়ায় পাড়ায় পাঠশালা। যা ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা। প্রাথমিক স্তরেও আপাতত সরকারের স্কুল খোলার কোনও পরিকল্পনা নেই বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।
কর্নাটকে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের পাশাপাশি প্রাথমিকেও ক্লাসরুমে পড়ালেখা শুরু হয়ে গেছে। অন্যান্য রাজ্যও পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে সেই পথেই হাঁটছে। তাহলে বাংলায় কেন নয় ? প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের শিক্ষক মহলের বড় একটি অংশ।প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণি – পুরোটাই ছাত্রছাত্রীদের ভিত্তি গড়ে তোলার সময়। ভিত নড়বড়ে থাকলে ভবিষৎ শিক্ষা জীবনে তার গুরুতর প্রভাব পড়ে বলে শিক্ষাবিদেরা মনে করেন। দুই বছর ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় বুনিয়াদি স্তরে শিশুদের একটি বড় অংশ কিছুই শিখছে না বলে শিক্ষাবিদদের আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে সরকার প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস চালু করতে বিলম্ব করায় বাচ্চাদের ক্ষতির পাল্লা আরও ভারি হল বলেই অভিযোগ বিশেষজ্ঞদের।
পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসঘরে পড়ালেখা শুরু না হলেও অবশ্য পাড়ায় পাড়ায় পাঠশালার মাধ্যমে শিক্ষাদানের পরিকল্পনা নিয়েছে শিক্ষা দফতর। কিন্তু সরকারের এই পদক্ষেপকে ভাল চোখে দেখছেন না শিক্ষাবিদদের একটি অংশ। পাড়ায় পাঠশালা স্কুলে স্কুলে ক্লাসরুমে পড়ালেখার বিকল্প নয় বলেই মনে করেন তাঁরা। কেন সরকার সত্বর প্রাইমারি বা আপার প্রাইমারি স্তরে ক্লাস খুলে দিতে গড়িমসি করছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে চিকিৎসক মহলেও। হয়তো পাঁচ থেকে পনেরো টিকাকরণ সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ওয়ান থেকে সেভেন পর্যন্ত স্কুল খোলার গরজ নেই সরকারের। কিন্তু কী বলছেন চিকিৎসকেরা? চিকিৎসকেরা বলছেন, ” টিকাকরণ হোক আর নাই হোক কোভিডে বাচ্চাদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা তিন শতাংশেরও কম।”
কবে পাঁচ থেকে পনেরো টিকার আওতায় আসবে স্পষ্ট করে কিছুই জানা নেই। এই পরিস্থিতিতে টিকাকরণ না হওয়া পর্যন্ত প্রাথমিক স্তরে এবং পঞ্চম থেকে সপ্তম পড়ালেখা বন্ধ রাখলে পড়ুয়াদের একটা বড় অংশের ভিত সারা জীবনের জন্য দুর্বল হয়ে পড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Photo Credit- india.com. Feature and Seconf image are representational.