পিনাকী ভট্টাচার্য কি চাচ্ছেন ফের নিরীহ বৈষ্ণবের রক্তে রঞ্জিত হোক বাংলাদেশের মাটি?
বাংলাদেশ ডেস্ক : বাংলাদেশের বিতর্কিত ব্লগার পিনাকী ভট্টাচার্য এখন ইসকনের বিরুদ্ধে সংখ্যাগুরুদের উস্কে দিতে চাইছেন । পেশায় চিকিৎসক পিনাকী ভট্টাচার্য একসময় সিপিবি করতেন। দুই হাজার তেরোর পর হঠাৎই বামপন্থা থেকে পাল্টি মেরে তিনি বাংলাদেশের ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের খিদমত শুরু করেন । বর্তমানে পিনাকী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামি লিগ সরকারের কট্টর বিরোধী। সামাজিক মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়িয়ে জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টির অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা মাত্রই বছর দুয়েক আগে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন পিনাকী । ফ্রান্সে বসেও বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনা ভারতের চক্রান্ত বলে দাবি করা পিনাকী এখন কোনও রাখঢাক না করেই ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যমে ইসকনের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক প্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ । স্বাভাবিকভাবেই ইসকন নিয়ে পিনাকীর ন্যারেটিভের তীব্র সমালোচনা শুরু করেছেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনেরা । জন্মসূত্রে সনাতনী হয়েও স্রেফ রোজগার বাড়ানোর তাগিদেই পিনাকী ভট্টাচার্য এখন ইসকনের মতো আন্তর্জাতিক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত বদনাম ছড়াচ্ছেন বলে মানুষের অভিযোগ ।
বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের ইসকনের বিরুদ্ধে তাতিয়ে তোলার লক্ষ্যেই পিনাকী সামাজিক মাধ্যমে বিদ্বেষমূলক পোস্ট দিয়ে যাচ্ছেন বলে অনেকের ধারণা। সবে মাত্র একটা বড় সাম্প্রদায়িক অশান্তি সামাল দিয়ে উঠেছে বাংলাদেশ প্রশাসন । অশান্তির জেরে বিরাট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সনাতনী সম্প্রদায়ের নাগরিকদের । আক্রান্ত সনাতন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গুলির মধ্যে ইসকনের ক্ষতির পরিমাণই সবথেকে বেশি। নোয়াখালীর চৌমুহনীতে ইসকনের মন্দির হামলায় বিধ্বস্ত । তিনজন ভক্ত ও সেবক নিহত । শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ও প্রভু নিত্যানন্দ প্রতিষ্ঠিত গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের প্রচার করে ইসকন । গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্ম বাঙালির এবং বাংলার ডিএনএ’র মধ্যে মিশে আছে। পৃথিবী জুড়ে এসি ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ প্রতিষ্ঠিত ইসকনের আধ্যাত্মিক কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে পড়েছে। কোথাও স্থানীয় জনগোষ্ঠী বা অন্য কোনও ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে ইসকনের কোনও সংঘাত সৃষ্টি হয় নি। কিন্তু বাংলাদেশে একাধিকবার ইসকনের স্থাপনা গুলিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে । নোয়াখালীর হামলার পর থেকে ইসকন সহ বাংলাদেশের সমস্ত সংখ্যালঘু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানই একটা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পিনাকী ভট্টাচার্যের মতো মানুষ ইসকনের বিরুদ্ধে সংখ্যাগুরুদের প্রকারান্তরে মাঠে নামতে ইন্ধন জোগানোয় ইসকন সহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাওয়াই স্বাভাবিক।
ছবি- সংগৃহীত।