দেশভাগের পর হিন্দুদের অগুণতি দেবোত্তর সম্পত্তি বেদখল হয়ে যায় পূর্ব পাকিস্তানে । স্বাধীন বাংলাদেশেও সেই সবের পুনরুদ্ধার সম্ভব হয় নি । পুরান ঢাকার ওয়ারির শতবর্ষ প্রাচীন শঙ্খনিধি মন্দির তেমনই একটি দেবোত্তর সম্পত্তি বলে দাবি পুজোর উদ্যোক্তাদের –
ঢাকা, বাংলাদেশ : মন্দিরে বাধা পেয়ে রাস্তাতেই প্রতিমা রেখে মাদুর্গার পুজো করতে বাধ্য হলেন ভক্তরা । ঘটনাটি ঘটেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ওয়ারি এলাকায় । পুরান ঢাকার ওয়ারির টিপু সুলতান রোডে রয়েছে ঐতিহাসিক শঙ্খনিধি মন্দির । মন্দিরটিতে রাধাগোবিন্দ জিউর বিগ্রহ পূজিত হতেন । যদিও ঢাকা সহ বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অসংখ্য দেবোত্তর সম্পত্তির মতো এই ঐতিহাসিক মন্দিরও জবরদখলকারীদের কবলে । এই বছর শঙ্খনিধি মন্দির কমিটি মন্দির প্রাঙ্গণে দুর্গাপুজো করার উদ্যোগ নিতেই স্থানীয় জবরদখলকারীরা প্রবলভাবে বাধা দেয় ।
জবরদখলকারীদের প্রতিরোধের মুখে ষষ্ঠীর দুপুরে মন্দিরে প্রতিমা ঢোকাতেই পারেন নি ভক্তরা । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এলেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনও সুবিচার পান নি মন্দির কমিটির সদস্যরা । উল্টো তাদের উপরেই পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ সংখ্যালঘুদের । যে ভবনটিতে ভক্তরা পুজো করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন সেখানে চল্লিশবছর ধরে ভাড়াটিয়া ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঘর রয়েছে বলে ওয়ারি বিভাগের উপকমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানিয়েছেন । যদিও পুজোর উদ্যোক্তাদের দাবি , ভবনটি একটি শতবর্ষ প্রাচীন ঐতিহাসিক মন্দির এবং তা দেবোত্তর সম্পত্তির অন্তর্গত । এই সংক্রান্ত যাবতীয় প্রমাণও ভূমি দফতরে সংরক্ষিত আছে বলে দাবি উদ্যোক্তাদের ।
যদিও বাধা পেয়েও পুজোর অঙ্গীকার থেকে পিছিয়ে আসে নি শঙ্খনিধি মন্দির কমিটি । রাস্তাতেই প্রতিমা স্থাপন করে পুজোর প্রস্তুতি শুরু করে দেন তারা । ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দচন্দ্র প্রামাণিক । হিন্দুদের পুজোয় বাধা ও পুলিশের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেন গোবিন্দবাবু । উদ্যোক্তারা পুজোয় অনড় দেখে সোমবার রাতে শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে আসে প্রশাসন । ওয়ারির টিপু সুলতান রোডে বলদা গার্ডেনের পাশে রাস্তার উপরেই পুজোর অনুমতি দেয় পুলিশ। আওয়ামি লিগের স্থানীয় সাংসদ এবং প্রশাসনের প্রতিনিধিরা শঙ্খনিধি মন্দিরের দেবোত্তর সম্পত্তির উপর অবৈধ লিজ বাতিল , মন্দির থেকে অবৈধ জবরদখলকারীদের উচ্ছেদ ও ঐতিহাসিক মন্দিরটি পুনরায় চালুর আশ্বাস দেওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে জাতীয় হিন্দু মহাজোট ।
ছবি – বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের ফেসবুক পেজ।