হাইলাইটস –
- একশ শতাংশই পাশ । সর্বোচ্চ ৬৯৭ নম্বর ৭৯ জনের। প্রথম বিভাগে ৯০ শতাং শ ।
- ইন্টারনাল ফরম্যাটিভ ইভ্যালুয়েশন পদ্ধতিতে মূল্যায়ণ । নবম শ্রেণির দুই পরীক্ষার রেজাল্টে জোর ।
- ১০ লক্ষ ৭৯ হাজার ৬৯৯ জন ছাত্র-ছাত্রীর সবাই উত্তীর্ণ । মেধা তালিকা বের করে নি পর্ষদ ।
- মাধ্যমিক শুরু হওয়ার পর এই প্রথম বিনা পরীক্ষায় পাশ পরীক্ষার্থীরা । পরীক্ষার্থীদের অভিনন্দন মুখ্যমন্ত্রীর।
কলকাতা : এবারের মাধ্যমিকে সব্বাই পাশ । মঙ্গলবার সকালে ২০২১ এর মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল ঘোষণা করেন পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় বন্দ্যোপাধ্যায় । খানিকটা টালবাহানার পর কোভিডের কারণে পরীক্ষাই বাতিল করে দেয় সরকার । এরপর বাকি ছিল আনুষ্ঠানিক ফল প্রকাশ । পরীক্ষা না হওয়ায় বিকল্প মূল্যায়ণ পদ্ধতি অনুসরণ করে পর্ষদ । এর নাম দেওয়া হয়েছে ইন্টারনাল ফরম্যাটিভ ইভ্যালুয়েশন ( IFE ) । অর্থাৎ স্কুলে ক্লাস পরীক্ষা , ষান্মাসিক ও বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্ট বিচার-বিশ্লেষণ করেই পরীক্ষার্থীদের নম্বর দেওয়া হয়েছে । ২০২০ র মার্চের মাঝামাঝি থেকে দেশ জুড়ে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ । অর্থাৎ এবার যারা মাধ্যমিক পাশ করল দশম শ্রেণিতেও ক্লাস করা বা পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পায় নি তারা । হয় নি টেস্ট পরীক্ষাও । কাজেই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ণের মান নিয়েও একটা প্রশ্ন থেকে যায় । ২০১৯ এ নবম শ্রেণির দুটো পরীক্ষার রেজাল্টকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি ।
পরীক্ষা না হওয়া পরীক্ষায় একশ শতাংশই পাশ । সর্বোচ্চ নম্বর উঠেছে ৭০০ তে ৬৯৭ । হয়তো ইচ্ছে করেই তিন কম রেখেছে পর্ষদ । মোট ৭৯ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ৬৯৭ নম্বর বন্টন করা হয়েছে । প্রথমবিভাগে পাশ করেছে ৯০ শতাংশ পড়ুয়া । অর্থাৎ ৬০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পেয়েছে এরা । এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার কথা ছিল ১০ লক্ষ ৭৯ হাজার ৬৯৯ জন ছাত্রছাত্রীর । ছাত্র ৪ লক্ষ ৬৫ হাজার ৮৫০ । ছাত্রী ৬ লক্ষ ১৩ হাজার ৮৪৯ । সকলেই পাশ । পরীক্ষা হয় নি । তাই এবার প্রথা মাফিক মেধা তালিকা প্রকাশ থেকে বিরত থাকছে মধ্য শিক্ষা পর্ষদ ।
১৯৭৬ সালে প্রথম দশম শ্রেণিতে শিক্ষান্তে নবম ও দশম শ্রেণির সিলেবাসের ওপর মাধ্যমিক পরীক্ষা ব্যবস্থার সূচনা । এরপর থেকে কখনও এই ধরণের পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় নি পর্ষদ ।এই প্রথম গোটা পরীক্ষাটাই বাতিল করে দিতে বাধ্য হয় সরকার । কোভিডের কারণে কেন্দ্রীয় বা প্রাদেশিক কোনও বোর্ড পরীক্ষাই এবার নেওয়া সম্ভব হয় নি । একমাত্র ব্যতিক্রম কেরালা । কোভিড পরিস্থিতিতে মাধ্যমিক , উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা গ্রহণ নিয়ে চাপে ছিল সরকার । ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবক মহলের একটি বড় অংশই পরীক্ষা গ্রহণের বিপক্ষে ছিল । শেষ পর্যন্ত দুটো পরীক্ষাই বাতিল করে বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়ণ করে ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার । এইভাবে বিনা পরীক্ষায় পাশের ফলে একটি প্রজন্মের ভবিষ্যৎ বড় রকমের ক্ষতিগ্রস্ত হল বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষাবিদদের কেউ কেউ । তবে কেউ বিনা পরীক্ষার রেজাল্টে সন্তুষ্ট না হলে তাকে পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পর্ষদ । ফল প্রকাশের পর পরই ট্যুইট করে পরীক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।