প্রদ্যুৎ দাস , জলপাইগুড়ি , ২৪ ডিসেম্বর : কলকাতা পুরনিগম সহ রাজ্যের একশোরও বেশি পুরসভার নির্বাচন স্থগিত রেখে দেশের শীর্ষ আদালতে প্রশ্নের মুখে রাজ্যের সরকার । এবার অবিলম্বে পুরভোট দাবি করে সরকারকে চেপে ধরতে শুরু করল বিরোধীরাও । অবিলম্বে জলপাইগুড়ি পুরসভার ভোটগ্রহণের দিন ঘোষণার দাবিতে বৃহস্পতিবার সদর মহকুমা শাসকের কাছে স্মারকলিপি দিল বৃহত্তর বাম ঐক্য ।
উল্লেখ্য গত মে মাসেই শতাধিক পুরসভায় ভোট হওয়ার কথা থাকলেও করোনা অতিমারি ও লকডাউনের কারণে ভোট স্থগিত করে দেয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন । নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় কলকাতা সহ বাকি সমস্ত পুরসভায় প্রশাসক বোর্ড বসিয়ে দেয় সরকার । মেয়াদোত্তীর্ণ পুরবোর্ড গুলোর প্রধানদেরই প্রশাসক বোর্ডের মাথায় বসিয়ে দেওয়া হয় । এরপর থেকে আর পুরভোটের কথা মুখে আনছে না রাজ্য সরকার । ইতিমধ্যে এ নিয়ে মামলা কলকাতা হাইকোর্ট ঘুরে সুপ্রিম কোর্টের দুয়ারেও পৌঁছে গিয়েছে । নির্বাচন স্থগিত রাখা নিয়ে সম্প্রতি তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা । বেকায়দায় পড়ে রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন আদালতের সামনে মার্চ মাস নাগাদ ভোট গ্রহণে মুখে সম্মতি জানালেও সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভাবগতিক দেখে সংশয় যাচ্ছে না রাজনৈতিক মহলের ।
পুরনির্বাচনের দাবিতে বামপন্থীদের স্মারকলিপি জলপাইগুড়িতে |
এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে পুরভোটের দাবিতে সোচ্চার হলেন বামপন্থীরা । এদিন অবিলম্বে জলপাইগুড়ি পুরসভার নির্বাচন সহ একাধিক দাবিতে জলপাইগুড়ির সদর মহকুমা শাসক রঞ্জনকুমার দাসের কাছে স্মারকলিপি দিলেন বৃহত্তর বাম ঐক্যের প্রতিনিধিরা । সিপিএম সহ বামফ্রন্টের চার শরিক ছাড়াও বিভিন্ন নকশালপন্থী দল ও এসইউসিআই কে নিয়ে বৃহত্তর বাম ঐক্য গঠিত হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক এবং জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক সলিল আচার্য অভিযোগ করেন, ‘ রাজ্য সরকার পুর নির্বাচন করতে ভয় পাচ্ছে । মেয়াদোত্তীর্ণ পুরসভা গুলোতে ভোট না করে বকলমে শাসকদলের রাজ কায়েম করা হয়েছে । এদিকে রাজ্যের এক একটি পুরসভায় সাত থেকে আঠারো মাস ধরে নির্বাচিত বোর্ডের অভাবে নাগরিক পরিষেবা শিকেয় উঠেছে । ‘ করোনা অতিমারির কারণে রাজ্যে পুর নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে বলে রাজ্য সরকারের দাবি । তবে এই দাবিকে নেহাত অজুহাতের অধিক বলতে রাজি নন বিরোধীরা । সলিলবাবুর প্রশ্ন , ‘ করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই বিহারের বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে । লোকসভা , বিধানসভার উপনির্বাচনও আটকে থাকে নি । বিভিন্ন রাজ্যে পঞ্চায়েত এবং পুরসভার ভোটও যথারীতি হয়েছে । তাহলে পশ্চিমবঙ্গে পুর নির্বাচন আটকে আছে কেন ? ‘ হেরে যাওয়ার ভয়েই রাজ্যের শাসকদল পুরভোট ঝুলিয়ে রেখেছে বলে কটাক্ষ করেন সলিল আচার্য ।
পুরসভায় প্রশাসক বোর্ড বসার পর থেকেই জলপাইগুড়ির ২৫ টি ওয়ার্ডেই যাবতীয় নাগরিক পরিষেবা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে বলে বাম ঐক্যের প্রতিনিধিদের অভিযোগ । প্রতিনিধি দলে সিপিএমের জেলা সম্পাদক ছাড়াও ছিলেন জেলা ফরওয়ার্ড ব্লকের সহসভাপতি গোবিন্দ রায় , প্রকাশ রায়, রণগোপাল ভট্টাচার্য, কৌশিক ভট্টাচার্য এবং বিপুল সান্যাল সহ অন্যান্যরা ।