প্রদ্যুত দাস ,জলপাইগুড়ি,২৬ জানুয়ারি : আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি মনোরঞ্জন দের ওপর হামলার ঘটনায় সরাসরি বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে পথে তৃণমূল । যদিও এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব । বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন ওই তৃণমূল নেতা ।
ঘটনার প্রতিবাদে আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের মিছিল |
পারিবারিক কাজ সেরে শিলিগুড়ি থেকে ফেরার পথে বৃহস্পতিবার রাত দুটো নাগাদ মালবাজার এলাকায় মনোরঞ্জনবাবু দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন বলে জানা গেছে । দুষ্কৃতীরা গুলি চালালে তৃণমূল নেতার পায়ে গুলি লাগে । বর্তমানে তিনি শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন । কে বা কারা আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি এবং আলিপুরদুয়ার এক নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মনোরঞ্জন দের ওপর হামলা চালিয়েছে এই ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছ থেকে বিস্তারিত কিছুই জানা যায় নি । তবে পুলিশের তদন্তের অপেক্ষায় না থেকে মাঠে নেমে গেছে তৃণমূল । জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগের আঙুল বিজেপির দিকে । শনিবার ঘটনার প্রতিবাদে আলিপুরদুয়ারে বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে মিছিল করেছে তৃণমূল । জলপাইগুড়িতেও সকালে রংধামালি মোড়ে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা । বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের গুলিতেই দলের নেতা আহত হয়েছেন বলে বিক্ষোভ থেকে অভিযোগ করেন তৃণমূলের নেতারা ।
ঘটনার প্রতিবাদে জলপাইগুড়িতে তৃণমূলের বিক্ষোভ |
এদিন শহরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে বঙ্গধ্বনি যাত্রায় সামিল হয়ে একই অভিযোগ তোলেন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ও । পথসভায় বক্তৃতা দেবার সময় সৈকতবাবু বলেন, ‘মনোরঞ্জন দে সুস্থ হয়ে আসবে । আলিপুরদুয়ারে ফিরবে । আর বিজেপির নেতারা সব আলিপুরদুয়ার ছেড়ে অন্য কোথাও যাবে । এটাই ভবিতব্য । গুলি গোলা চালিও না । গুলি চালালে তৃণমূল রসগোল্লা ছুঁড়বে না ।’
যদিও জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতির হুঁশিয়ারিকে আমল দিতে নারাজ জেলা যুব মোর্চার সভাপতি পলেন ঘোষ । দলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই মনোরঞ্জন দে আক্রান্ত হয়েছেন – পাল্টা এই অভিযোগ করে যুব মোর্চার জেলা সভাপতির কটাক্ষ, ‘ রসগোল্লা ছুঁড়তে হলে তো নিজেদের দলের লোকদের ওপরেই ছুঁড়তে হবে। গুলি চালিয়েছে ওদের দলেরই লোক । বিজেপি কোনও দিন গুলি- সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত ছিল না । কোনও দিন থাকবেও না । ‘ পলেন ঘোষ আরও বলেন, ‘ আমরা বাংলায় আসার পর এ গুলো সব নির্মূল হয়ে যাবে । তৃণমূলের যারা সন্ত্রাসবাদী আছে তারা সব ঘরে ঢুকে যাবে । দু’চারজন যারা থাকবে তারা রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে যাবে । ‘ তৃণমূলের নেতারা বিজেপির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য সব লাইন দিয়ে কলকাতা , দিল্লি দৌড়াচ্ছে বলেও কটাক্ষ করতে ছাড়েন নি যুবমোর্চার জেলা সভাপতি । আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল নেতার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন তিনি। বিজেপির যুবনেতা বলেন, ‘ ঘটনার তদন্ত হোক । সরকার , প্রশাসন সবই তো ওনাদের হাতে । ‘ সেইসঙ্গে যুবমোর্চা সভাপতির কটাক্ষ, ‘ পুলিশ ঠিক করে তদন্ত করতেও পারবে না। করলেই তৃণমূলের নিজেদের লোকের নাম চলে আসবে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসবে ।’
সৈকত চ্যাটার্জিকে কটাক্ষ জেলা যুবমোর্চা সভাপতি পলেন ঘোষের |