কলকাতা : এখনও রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর ঠিকঠাক খোঁজ পায় নি সংবাদ মাধ্যম। পরেশ লা পাতাই বলা চলে। মঙ্গলবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চ নিয়োগ দূর্নীতি মামলায় পরেশকে সিবিআই তদন্তের মুখোমুখি হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই দ্রুত বদলাচ্ছে দৃশ্যপট। সন্ধ্যায় পরেশ অধিকারী কলকাতার ট্রেন ধরলেও বুধবার সকালে শিয়ালদহে নামেন নি। যতটুকু জানা গেছে, ভোর রাতে ট্রেন বর্ধমানে থামতেই কন্যা সহ নেমে যান পরেশ অধিকারী। এরপর কলকাতায় ঢোকার ঝুঁকি না নিয়ে বর্ধমান সার্কিট হাউসেই গা ঢাকা দেন রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু কিছুতেই তাঁর নাগাল পাচ্ছেন না সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা। মন্ত্রীমশাইয়ের সবকটি মোবাইল নম্বরের সুইচ অফ।
দুপুর পর্যন্ত একটা ক্ষীণ আশা ছিল, হয়তো ডিভিশন বেঞ্চে গিয়ে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হওয়া অন্তত এই যাত্রার মতো আটকানো যাবে। কিন্তু বিচারপতিরা বিমুখ করতেই ঘরে খিল দিয়েছেন প্রাক্তন বামনেতা। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে যে, বুধবার পড়ন্ত বিকেলে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বর্ধমান সার্কিট হাউস থেকে একটি সাদা গাড়িতে চেপে বেরিয়ে গেছেন পরেশ অধিকারী। কিন্তু রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কোথায় গেছেন, কেউ জানে না। এদিকে যিনি শিক্ষামন্ত্রী থাকার সময় পরেশের মেয়ের চাকরি লাভ তিনিও বেকায়দায়। ডিভিশন বেঞ্চ তাঁকেও ফিরিয়ে দিয়েছে। সন্ধ্যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় যখন নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের দরবারে, তখন কি পরেশ সিবিআইয়ের ভয়ে দিশেহারা হয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন?
পরেশ অধিকারী ছিলেন লড়াকু বামনেতা। বাম আমলে ছিলেন খাদ্য দফতরের পূর্ণমন্ত্রী। আঠারোয় ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ পরেশ অধিকারীর। দলবদলের ইনাম স্বরূপ বেআইনিভাবে মেয়ের শিক্ষকতার চাকরি। গত বছর দিদির দয়ায় পূর্ণমন্ত্রী থেকে ডিমোশান পেয়ে প্রতিমন্ত্রী। আর বাইশের মে মাসের মাঝামাঝি ঘাড়ে পুরো শনি! রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর খোঁজ নেই। সামাজিক মাধ্যম জুড়ে নেটিজেনদের মধ্যে খিল্লির বন্যা। বিজেপি নেতা ও কলকাতা পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সজল ঘোষ তো নিজের ফেসবুক পেজে পরেশ অধিকারীর নামে সন্ধান চাই বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দিলেন। ইতিমধ্যেই যা ভাইরাল। সজল মজা করে লিখেছেন- “হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তির পেশা মন্ত্রীত্ব। ট্রেন থেকে নিখোঁজ। দেহে দুর্নীতির দাগ। খোঁজ পেলে সিবিআইকে জানান এবং সন্ধানদাতাকে সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি দেওয়া হবে।”
Photo source- Facebook.