নাগরিক সায়েন্স ডেস্ক : মঙ্গল গ্রহের বাতাসে হেলিকপ্টার উড়িয়ে ইতিহাস গড়ল নাসা । ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পৃথিবী থেকে নিয়ন্ত্রিত কোনও যানকে অন্য কোনও গ্রহের আকাশে উড়াতে সক্ষম হল মানুষ । পারসিভেয়ারেন্স রোভার যানের সঙ্গে ‘ ইনজেনুয়িটি ‘ নামে একটি হেলিকপ্টার মঙ্গলে পাঠিয়েছিল আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা । মাত্র এক দশমিক আট কেজি ওজনের হেলিকপ্টারটিকে মঙ্গল গ্রহের বাতাসে ওড়ানোটা নাসার বিজ্ঞানীদের জন্য ছিল একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ । কেননা মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল এতটাই পাতলা যে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের তুলনায় এর ঘনত্ব মাত্র এক শতাংশ । মঙ্গলে মাধ্যাকর্ষণ বল খানিকটা কাজ করলেও এত পাতলা বাতাসে হেলিকপ্টার বা ড্রোনের মতোই কোনও পাখাওয়ালা যানকে মাটি থেকে আকাশে তোলা যথেষ্টই কঠিন কাজ । অবশেষে এই অসাধ্যই সাধন করলেন পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা ।
মঙ্গল পৃষ্ঠে ইনজেনুয়িটি । |
মঙ্গল গ্রহের আকাশে হেলিকপ্টার ওড়ার ছবি সোমবার গ্রিনিচ সময় রাত ৩টা ৩৪ মিনিটে নাসার নিয়ন্ত্রণ কক্ষে এসে পৌঁছানোর সাথে সাথেই উল্লাসে ফেটে পড়েন বিজ্ঞানীরা । মঙ্গল গ্রহের মাটি থেকে পারসিভেয়ারেন্স রোভার যানের ক্যামেরায় তোলা সেই ছবি মঙ্গলের কক্ষপথে প্রদক্ষিণরত উপগ্রহের মাধ্যমে পৃথিবীতে এসে পৌঁছায় । এক দশমিক আট কেজি ওজনের হেলিকপ্টারটি মঙ্গল পৃষ্ঠ থেকে তিন মিটার উচ্চতায় উঠে চল্লিশ সেকেন্ড ওড়ার পর সফলভাবেই অবতরণ করতে পেরেছে বলে নাসার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ।
মঙ্গলের আকাশে উড়ছে পৃথিবীর হেলিকপ্টার ! |
যাবতীয় প্রতিকূলতা ছাপিয়ে ইনজেনুয়িটিকে মঙ্গলের আকাশে উড়াতে সক্ষম হওয়ার পর যানটিকে আরও উঁচুতে আরও অনেকটা সময় ধরে এবং আরও অনেকটা দূর পর্যন্ত উড়াতে চান নাসার বিজ্ঞানীরা । পরবর্তীতে আরও চারবার হেলিকপ্টারটি ওড়ানোর চেষ্টা চালাবে নাসা। হেলিকপ্টার উড়িয়ে মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠদেশ সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হবে বলে বিজ্ঞানীদের আশা । উল্লেখ্য নাসার পারসিভেয়ারেন্স রোভার যানের মঙ্গলে সফল অবতরণের পর নাসার নিয়ন্ত্রণ কক্ষে প্রথম ছবি পাঠায় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি । ঠিক দু’মাস পর মঙ্গলের আকাশে হেলিকপ্টার উড়িয়ে বহু কাঙ্ক্ষিত পরীক্ষাটিতেও সফল হল নাসা ।