জলপাইগুড়ি : প্যাঙ্গোলিন। ফোলিডোটা বর্গের আঁশযুক্ত এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটির মতো নিরীহ প্রাণী পৃথিবীতে খুব কমই আছে । পিঁপড়ে,পিঁপড়ের ডিম খায় বলে এদের আরেক নাম পিপীলিকাভূক। সর্বাঙ্গ মোটা আঁশ দিয়ে ঢাকা। তাই বাঙালিরা এর নাম দিয়েছে বনরুই । মানুষের লালসার শিকার হয়ে অবলুপ্ত হতে চলেছে এহেন নিরীহ প্রাণীটিও। ডুয়ার্স ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জঙ্গলে প্যাঙ্গোলিনের দেখা মেলে । চোরাশিকারীরা হামেশাই প্যাঙ্গোলিন মেরে পাচার করে দেয় মধ্যপ্রাচ্য এবং চিন সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। প্যাঙ্গোলিনের চামড়া ও আঁশের প্রতি দুর্বলতা আছে মধ্যপ্রাচ্যের আরব শেখ ও চিনাদের। চামড়া ও আঁশ দিয়ে নানা ওষুধ তৈরি করে তারা । মোটা টাকার লোভে আমাদের দেশের জঙ্গল থেকে প্যাঙ্গোলিন মেরে চামড়া পাচার করে দেয় চোরা কারবারীরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নেপাল হয়ে চামড়া পৌঁছে যায় যথাস্থানে । রবিবার এমনই দুই পাচারকারীকে গ্রেফতার করে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে তুলল বন দফতর।
শনিবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে চালসা-মালবাজার গ্রামীণ সড়কে অভিযান চালান বন দফতরের লাটাগুড়ি রেঞ্জ ও ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর সদস্যরা। সড়কের কুর্তী সেতু সংলগ্ন এলাকায় দুই যুবক বাইকে চেপে প্যাঙ্গোলিনের চামড়া ও আঁশ বিক্রি করতে এলে ক্রেতা সেজে তাদের গ্রেফতার করেন বনকর্মীরা। বমাল ধরা পড়ে দুই পাচারকারী। ধৃত দু’জনের নাম আনন্দ বারলা ও নেওলা ভেংরা । আনন্দের বাড়ি ডুয়ার্সের সাইলি চাবাগানে । নেওলা থাকে রানিচেরা চা বাগানে।
উদ্ধার হওয়া চামড়া ও আঁশ দশ লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হত বলে ধৃতদের জেরা করে জানতে পেরেছেন বন দফতরের আধিকারিকেরা। ধৃত দু’জনকে বড় কোনও পাচারকারী দলের ছোটখাটো সদস্য বলে মনে করছে বন দফতর। এরা ক্যারিয়ারের কাজ করত। অন্তরালে বসে বন্য প্রাণীর দেহাংশ পাচারের কারবারটা পরিচালনা করে শক্তিশালী একটি চক্র। বন দফতরের অভিযানে চুনোপুঁটিরা ধরা পড়লেও পান্ডারা ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থাকে অধিকাংশ সময় ।
Photo and Video- Reporter. Photo of Pangolin is symbolic.