জলপাইগুড়ি : জঙ্গল ছেড়ে এবার জলপাইগুড়ি শহরেই হানা দিল ভালুক । মঙ্গলবার সকালে শহরের তিস্তা উদ্যানে অজানা জন্তুর পায়ের ছাপ ও রক্তের দাগ নজরে আসার পর থেকেই শহরে আতঙ্ক। খবর পেয়ে তিস্তা উদ্যানে পৌঁছান বন দফতরের আধিকারিকেরা। পায়ের ছাপ ও রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে দেখার পর বন দফতরের বিশেষজ্ঞরা এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যান যে ছাপটি ভালুকের পায়েরই । জেলাশাসকের বাংলোর ঠিক উল্টো দিকেই তিস্তা উদ্যান । পরে বাংলো সংলগ্ন সিসি টিভির ফুটেজেও ভালুকের উপস্থিতি ধরা পড়েছে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গেছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই ডুয়ার্সের জঙ্গল সংলগ্ন লোকালয় গুলিতে ভালুক ঢুকে পড়ছে । ভালুকের হাতে কয়েকজন গ্রামবাসীর আক্রান্ত হবার খবরও পাওয়া গেছে। এবার জঙ্গল থেকে অনেকটা দূরে জলপাইগুড়ি শহরেই ভালুকের আনাগোনা দেখে চিন্তিত বন দফতরের আধিকারিকেরা। তিস্তা উদ্যানে ভালুকের পায়ের ছাপ পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশেপাশের এলাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তিস্তা উদ্যানের একেবারে পাশেই সার্কিট হাউস এবং চারপাশে বিভাগীয় কমিশনার, জেলাশাসক এবং জেলা বিচারপতি সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীদের বাংলো। ঢিল ছোড়া দূরত্বে জেলাশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপার সহ একাধিক সরকারি দফতর। জেলা প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্রে ভালুক ঢোকার খবরে স্বাভাবিক ভাবেই তটস্থ হয়ে পড়েন সবাই। তিস্তা উদ্যানে সাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রশাসন। কালেক্টরেট অ্যাভিনিউ সহ আশপাশের রাস্তায় মানুষের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। উদ্যানের ভেতরে এবং তিস্তা ও করলার বাঁধের আশেপাশের ঝোঁপঝাড়ে তল্লাশি চালান পুলিশ ও বনকর্মীরা।
কিছু দিন আগেই জলপাইগুড়ি শহরে দুটি হাতি ঢুকে পড়েছিল । হাতি দুটিকে জঙ্গলে ফেরাতে যথেষ্টই বেগ পেতে হতে হয় বনকর্মীদের। ডুয়ার্সের জঙ্গল সংলগ্ন লোকালয়ে হাতি-বাইসনের উপদ্রব নতুন নয় । কিন্তু বন ছেড়ে লোকালয়ে ভালুকের ঢুকে পড়ার খবর আগে তেমন শোনা যেত না। এখন রোজই ভালুক লোকালয়ে চলে আসায় মানুষ আতঙ্কের মধ্যে আছে । জঙ্গলের ঘনত্ব হ্রাস ও খাদ্যের অভাব ঘটাতেই ভালুক লোকালয়ে হানা দিচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
ফিচার ফটো প্রতীকি । বাকি ছবি ও ভিডিও সংবাদদাতার।