১৯৯৩ এর একুশে জুলাই । যুব কংগ্রেসের মহাকরণ অভিযানে পুলিশের গুলি । ঝরে পড়ল তেরোটি প্রাণ ! সেদিন কার নির্দেশে ট্রিগার চেপেছিল পুলিশ ? ২৮ বছর পরেও অজানা । দাখিলের সাত বছর পরেও জাস্টিস সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় কমিশনের রিপোর্ট হিমঘরে । একুশে জুলাই নিয়ে একটি প্রতিবেদন –
তখনও তৃণমূল কংগ্রেস মহাকালের গর্ভে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী । প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন সোমেন মিত্র । কংগ্রেসে থাকা কালীন সোমেন মিত্রের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক কেমন মধুর ছিল তা সবার জানা । শুধু আমহার্স্ট স্ট্রিটের ছোড়দা কেন মমতা যতদিন কংগ্রেসে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে তাঁর সুহৃদের অভাব ছিল না । তিনি যাতে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি না হতে পারেন তার জন্য যারা পেছন থেকে আন্তরিকতার সঙ্গে কলকাঠি নাড়াতেন তাঁদের অনেকেই আজ মমতা বলতে অজ্ঞান । বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে যে কোনও আন্দোলন কর্মসূচী যুব কংগ্রেসের ব্যানারে একাই নিতেন মমতা । ১৯৯৩ এর একুশে জুলাই মহাকরণ অভিযান ছিল তেমনই একটি কর্মসূচী । নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনা , সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র চালু প্রভৃতি দাবিতে মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছিল যুব কংগ্রেস ।
আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যে কেউ বলবেন , নির্বাচন সংক্রান্ত এই সব দাবি দাওয়া উত্থাপন করার উপযুক্ত জায়গা তো নির্বাচন কমিশন । তা মহাকরণ অভিযান করতে গিয়েছিলেন কেন মমতা ? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যেকোনও রাজনৈতিক কর্মসূচীর লক্ষ্য থাকত বামফ্রন্ট সরকারকে ব্যতিব্যস্ত করা । সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কমিটমেন্টে কোনও ফাঁকিবাজি ছিল , মমতার অতিবড় শত্রুও এই অপবাদ দিতে পারবে না। বাম জামানায় অনেক কংগ্রেস নেতারই তরমুজ খ্যাতি জুটেছিল । কিন্তু মমতাকে কখনও ম্যানেজ করতে পারে নি আলিমুদ্দিন স্ট্রিট । কাজেই কর্মসূচী যাই হোক না কেন , ১৯৯৩ এর একুশে জুলাই মমতার টার্গেট ছিল জ্যোতি বসুর সরকারকে বিব্রত করা । গণতন্ত্রে বিরোধী দলের জন্য কাজটা এমন কিছু অশৈলী নয় ।
প্রশ্ন হল সেদিন কী এমন ঘটনা ঘটেছিল যা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১২১ রাউন্ড গুলি ( ৭৫ রাউন্ড রাইফেল আর ৪৬ রাউন্ড রিভলবার থেকে । ) চালিয়েছিল ? যার পরিণাম ১৩ টি প্রাণের মৃত্যু ! জ্যোতি বসুর জামানায় পুলিশকে বলা হত ট্রিগার হ্যাপি । বিগড়ে যাওয়া জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে জল কামান , রাবার বুলেট তখনও আসে নি । বিক্ষোভ একটু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলেই গুলি চালিয়ে দিতে পুলিশ । বামফ্রন্ট আমলে একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটেছে । লোকে গুলি খেয়ে মরলে জ্যোতিবাবু যে খুব বিব্রত হতেন , তেমনও নয় । ১৯৯০ সালের ৩১ আগস্ট বাসভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করার সময় কলকাতায় এসইউসির মাধাই হালদার পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার পর রাইটার্স থেকে বেরোতে বেরোতে সাংবাদিকদের জ্যোতি বসু বলেছিলেন, ‘ ওদের ( এসইউসির ) নিরামিষে পোষাচ্ছিল না । পুলিশ একটু আমিষ করে দিল । ‘ পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের নেতাদের মধ্যে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচীতেই জনসমাগম হত । প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি যখন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি , একবার মহাকরণ অভিযান ডেকে চূড়ান্ত ফ্লপ হয়েছিলেন । কিন্তু ১৯৯৩ এর জুলাই মাসে যুব কংগ্রেসের মহাকরণ অভিযানের কথা ঘোষণা হওয়া মাত্রই রাজনৈতিক মহলে টানটান উত্তেজনা অনুভূত হয় । মমতার কোনও কর্মসূচীকেই হেলাফেলা করত না সিপিএম এবং প্রশাসন । কাজেই একুশে জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মহাকরণ অভিযান মোকাবিলায় পুলিশের দিক থেকে প্রস্তুতির কোনও ঘাটতি ছিল না । কিন্তু তারপরেও বিনা বুলেটে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়েছিল পুলিশ ।
পুলিশের পেশ করা রিপোর্ট অনুযায়ী যুব কংগ্রেসের মহাকরণ অভিযানের দিন মেয়ো রোডে ১৫ হাজার , ধর্মতলায় ১৫ হাজার , ব্রেবোর্ন রোডে ১০ হাজার , স্ট্র্যান্ড রোডে ১০ হাজার এবং বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে ৭ হাজার মানুষের জমায়েত হয়েছিল । পুলিশের হিসেবেই যখন সব মিলিয়ে ৫৭ হাজার তখন ধরেই নেওয়া যায় জমায়েতের সংখ্যাটা দ্বিগুণও হয়ে থাকতে পারে । অভিযান ঘিরে সেদিন সকাল থেকেই দু’তরফেই সাজসাজ রব । মহাকরণের আশেপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্টই জোরদার করা হয়েছিল । কর্মীদের অনেকটা আগে থাকতেই রাইটার্স বিল্ডিংয়ে ঢুকে পড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সেদিন । জনতার টেম্পার হাইয়ে তুলতে নিঃসন্দেহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জুড়ি নেই । তিনি নিজে সেদিন মহাকরণ অভিযানের কর্মসূচীকে কতটা আক্রমণাত্মক করতে চেয়েছিলেন তা মমতাই ভালো জানেন । তবে প্রশাসনের সদর দফতর ঘিরে ফেলা ধরণের যে কোনও আন্দোলন মোকাবিলায় সরকারের দিক থেকেও ঢিলেমির কোনও অবকাশ থাকে না সঙ্গত কারণেই । তখন স্বরাষ্ট্রসচিব ছিলেন মনীশ গুপ্ত । যিনি এগারোয় যাদবপুরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে হারিয়ে মমতার মন্ত্রী হয়েছিলেন । ১৯৯৩ এর দোসরা আগস্ট একুশে জুলাইয়ের ঘটনা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব মনীশ গুপ্ত । স্বরাষ্ট্রসচিবের সেই রিপোর্টে অভিযোগের তির যুব কংগ্রেসের দিকে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রাক্তন বিদ্যুৎ মন্ত্রী মনীশ গুপ্ত আর বামফ্রন্ট জামানার স্বরাষ্ট্রসচিব মনীশ গুপ্ত – একই মানুষ। মমতার সরকারের মন্ত্রী হওয়ার ১৮ বছর আগে বামফ্রন্ট সরকারের স্বরাষ্ট্রসচিব হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যে হলফনামা মনীশ গুপ্ত দিয়েছিলেন তা নিঃসন্দেহে তখনকার সরকারের , ব্যক্তি মনীশের নয় । স্বরাষ্ট্রসচিব মনীশ গুপ্তের হলফনামায় কী ছিল ? সেদিনের গন্ডগোলের দায় নেশাগ্রস্ত দুষ্কৃতীদের ঘাড়ে চাপিয়ে ছিল সরকার । আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে যথেচ্ছ ইট, পাথর , সোডার বোতল , বোমা এমনকি পাইপগান থেকে গুলি ছোঁড়ে বলে দাবি করা হয় সরকারি রিপোর্টে । হলফনামায় যুব কংগ্রেসিদের আক্রমণে ২১৫ জনের বেশি পুলিশ কর্মী আহত হওয়ার কথা জানান স্বরাষ্ট্রসচিব । আহতদের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার , যুগ্ম কমিশনার , ডিসি ( সদর ) , ৭ জন ডিসি , ১০ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিক ছিলেন । কোন কোন পুলিশ কর্মীর দেহে বোমার স্প্লিন্টার ও পাইপগানের বুলেট পাওয়া গিয়েছিল হলফনামায় তাও উল্লেখ করে সরকার ।
অর্থাৎ স্বরাষ্ট্রসচিব হিসেবে মনীশ গুপ্ত আদালতে যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন তাতে ঘটনার গোটা দায় যুব কংগ্রেসিদের ঘাড়ে ঠেলার চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখা হয় নি । সেদিন ‘ মহাকরণ দখল ‘ শব্দটার ওপর খুব জোর দিয়েছিল সরকার । পুলিশ গুলি না চালালে সেদিন মহাকরণ দখল কিম্বা আন্দোলনকারীদের হাতে মুখ্যমন্ত্রী , স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আক্রান্ত হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারত বলে অভিযোগ করা হয় হলফনামায় । কিন্তু প্রশ্ন হল সেদিন কার নির্দেশে গুলিটা চালিয়েছিল পুলিশ ? এই প্রশ্নের মীমাংসা হয় নি আজও । তখন কলকাতা পুলিশের কমিশনার ছিলেন তুষার তালুকদার । ঘটনার ১৬ বছর পর কলকাতা থেকে প্রকাশিত একটি ইংরেজি দৈনিকের সাংবাদিকের কাছে এই নিয়ে কিছু কথা বলেছিলেন তুষারবাবু । তুষার তালুকদারের কথায় , সেদিন সকাল এগারোটা নাগাদ মেয়ো রোড ধরে ধরে হাজার হাজার আন্দোলনকারী যখন রাজভবনের দিকে এগোচ্ছিল ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের ওয়ারলেস ভ্যান তাঁকে রিপোর্ট পাঠাচ্ছিল। ওয়ারলেসে সিপিকে কী জানাচ্ছিল পুলিশ ? তুষার তালুকদার বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চা পর্ষদের অফিসের সামনে আটকে দেওয়া গেলেও মেয়ো রোডে পরিস্থিতি দ্রুত হাতের বাইরে চলে যাচ্ছিল । রাজভবনের আশেপাশে ১৪৪ ধারা জারি ছিল । পুলিশ কমিশনারকে তাঁর অফিসারেরা ঘটনাস্থল থেকে ওয়ারলেসে জানান,’ উত্তেজিত জনতাকে পুলিশ বারংবার চলে যেতে অনুরোধ করলেও তা কেউ গ্রাহ্য করছে না । ‘ এরপর লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটানো শুরু হয় । লালবাজারে বসে ওয়ারলেস মারফত তা জানতেও পারেন পুলিশ কমিশনার । সেই সময় ঘটনাস্থল থেকে একজন পুলিশ আধিকারিক নাকি সিপিকে জানিয়েছিল , ‘ পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে গুলি না চালালে পুলিশ কর্মীদের জীবন বিপন্ন তো হবেই এমনকি মহাকরণ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়ে যেতে পারে । ‘ এরপর সিপি শুনতে পান , পুলিশ মেয়ো রোডে গুলি চালিয়েছে । কিন্তু গুলি চালানোর নির্দেশ কার কাছ থেকে এলো ? তুষার তালুকদারের দাবি, ১৯৯৩ এর একুশে জুলাই লালবাজারে বসে কোনও গুলির নির্দেশ তিনি দেন নি । ঘটনার পর পর সাংবাদিক সম্মেলনেও পুলিশ কমিশনার বলেছিলেন, ‘ গুলি চালানোর বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না । ‘ যদিও গুলিটা চালিয়েছিল তাঁরই বাহিনী । কিন্তু কমিশনার জানতেন না !
প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের এই বয়ানে অসঙ্গতির ছাপ স্পষ্ট । কারণ মেয়ো রোডে যা যা ঘটছিল তার সবই ঘটনাস্থল থেকে ওয়ারলেসে ধারা বিবরণী দিয়ে পুলিশ কমিশনারকে শোনাচ্ছিলেন তাঁর অফিসারেরা । তুষার তালুকদার নিজেই সেটা স্বীকার করেছেন । তাহলে গুলি চালানোর ঘটনা কমিশনারের অগোচরে ঘটে কীভাবে ? ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত কলকাতা পুলিশের কোনও এক অধস্তন আধিকারিক ১৯৯৩ এর একুশে জুলাই মেয়ো রোডে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে গুঞ্জন । সেই আধিকারিক কীভাবে রুলবুকের বিধি অগ্রাহ্য করে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন ? নাকি ঊর্ধ্বতন কারও কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি পাওয়ার পরেই গুলি চালাতে বলেছিলেন তিনি ? ঘটনাস্থলে উপস্থিত সেই অধস্তন আধিকারিকই বা কে ? বিক্ষোভকারীদের পা লক্ষ্য করে গুলি চললে নিঃসন্দেহে মৃতের সংখ্যা ১৩ দাঁড়াতো না । পুলিশের রুলবুকে তেমনই বলা থাকে । সেদিন কেন পুলিশ জনতার বুক তাক করে গুলি ছুঁড়েছিল ? এইসব প্রশ্নের কোও সদুত্তর মেলে নি আজও । ঘটনার পরে সাংবাদিকরা এইসব নিয়ে তদানীন্তন পুলিশ কমিশনারকে প্রশ্ন করলে তাঁর ছোট্ট জবাব ছিল – তদন্ত করা হবে।
এগারোয় তৃণমূল সরকারে আসার পর একুশে জুলাই নিয়ে জাস্টিস সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের কমিশন গঠন করে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । ২০১৪ সালেই সরকারের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয় বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের কমিশন । সেই রিপোর্ট এখনও পর্যন্ত বিধানসভার সামনে পেশ করে নি সরকার । কমিশনের সুপারিশ মেনে কোনও পদক্ষেপও করে নি সরকার । সাত বছর যাবত হিমঘরে কমিশনের রিপোর্ট । বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় কমিশনের রিপোর্ট কার্যকর করার আশ্বাস দিয়েও তা নিয়ে একদম চুপচাপ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ।
১৯৫৯ এর ৩১ আগস্ট কলকাতায় খাদ্য আন্দোলনে পুলিশি অভিযানে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলে দাবি । পশ্চিমবঙ্গের বাম রাজনীতিতে ৫৯ এর ৩১ আগস্টের যেই গুরুত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে ১৯৯৩ এর একুশে জুলাইয়ের গুরুত্ব তার চেয়ে কিছু কম নয় । ক্ষমতায় এলে একুশে জুলাই ম্যাসাকারের নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস । এগারোয় তৃণমূল সরকারে আসার পর একুশে জুলাই নিয়ে জাস্টিস সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের কমিশন গঠন করে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । ২০১৪ সালেই সরকারের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয় বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের কমিশন । সেই রিপোর্ট এখনও পর্যন্ত বিধানসভার সামনে পেশ করে নি সরকার । কমিশনের সুপারিশ মেনে কোনও পদক্ষেপও করে নি সরকার । সাত বছর যাবত হিমঘরে কমিশনের রিপোর্ট । বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় কমিশনের রিপোর্ট কার্যকর করার আশ্বাস দিয়েও তা নিয়ে একদম চুপচাপ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার । কমিশনের প্রতিবেদনে একুশে জুলাই গুলি চালানোর ঘটনাকে গভীর ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করা হয় । সেদিনের ঘটনার দায় তদানীন্তন প্রশাসনের দিকেই সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় কমিশন ঠেলেছে বলে জানা যায় । কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না বিচারবিভাগীয় কমিশনের রিপোর্ট আনুষ্ঠানিক ভাবে বিধানসভার সামনে প্রকাশ করছে সরকার , ততক্ষণ পর্যন্ত এই তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে কী লেখা আছে , কাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে , কী কী সুপারিশ করা হয়েছে তার কানাকড়ি মূল্য নেই ।
Photos – Archives