লক্ষকন্ঠে গীতাপাঠের ব্রিগেডে পাঁচ লক্ষের ভিড়! মাটিতে বসেই গীতাপাঠ বিরোধী দলনেতার

লক্ষকন্ঠে গীতাপাঠের ব্রিগেডে পাঁচ লক্ষের ভিড়! মাটিতে বসেই গীতাপাঠ বিরোধী দলনেতার


ভিডিও: ব্রিগেডে সনাতন সংস্কৃতি সংসদ আয়োজিত লক্ষকন্ঠে গীতাপাঠের আসর যেন জনসমুদ্র! সংগৃহীত ফুটেজ

আয়োজকদের টার্গেট ছিল, কমপক্ষে ৫ লক্ষ মানুষের জমায়েত। ভিড়ের যা ছবি ধরা পড়েছে, তাতে বলাই যায় আয়োজকরা নিরাশ হন নি। গত বছরের থেকে এ বছরের গীতাপাঠে মানুষের সমাগম ছিল অনেক বেশি। জমায়েতে উপস্থিত জনগণের সিংহভাগই যে বিজেপি ও হিন্দুত্বের রাজনীতির সমর্থক, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।‌ লক্ষকন্ঠে গীতাপাঠের ব্রিগেডে জনজোয়ার ভোটের আগে বিজেপিকে যে অক্সিজেন জোগাবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। বেদপাঠ ও কীর্তন পরিবেশন দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু। বেলা ১২টা নাগাদ গীতাপাঠ শুরু হয়। শ্রীমদ্ভগবদগীতার প্রথম, নবম ও অষ্টাদশ- এই তিনটি অধ্যায় পাঠ করা হয় সমাবেশে।

লক্ষকন্ঠে গীতাপাঠ: ব্রিগেডে জনসমুদ্র! গত বছরের ভিড়কে ছাপিয়ে গিয়েছে এ বছরের ভিড়। ছবি: এন‌এনডিসি

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেত্রী সাধ্বী ঋতাম্ভরা ও বাগেশ্বর ধামের পীঠাধীশ্বর ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ শাস্ত্রী সহ অন্যান্য ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক নেতানেত্রী গীতাপাঠ শেষে ভাষণ দেন। এ দিনের অনুষ্ঠানে সবার নজর ছিল দু’জনের দিকে। একজন সাধ্বী ঋতাম্ভরা, অপরজন বাগেশ্বর বাবা ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ শাস্ত্রী। সাধ্বী ঋতাম্ভরা বাঙালির উদ্দেশে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা জেগে ওঠো। পশ্চিমবঙ্গের মাটি জেগে ওঠো। দুষ্টের দমন করো। গীতার বাণী ক্লীবদের জন্য নয়, বীরদের জন্য। হিন্দুরাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে হিন্দুরা ঐক্যবদ্ধ হ‌ও।”

বাগেশ্বর বাবা তাঁর সংক্ষিপ্ত ভাষণে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা যদি ঐক্যবদ্ধ হতে পারেন, তবে ভারতের হিন্দুরাষ্ট্র হ‌ওয়া বেশি দূরের ব্যাপার নয়। বাংলায় এসে আমার খুব ভাল লাগছে। আবার আসব।” অনুষ্ঠানে গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অভয়বাণী “পরিত্রাণায় সাধুনাং” শ্লোক উদ্ধৃত করে বাংলায় ‘দুষ্টের দমনের’ ডাক দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপাল বলেন, সমস্ত ক্লীবত্ব ঝেড়ে ফেলে পশ্চিমবঙ্গ এখন শ্রীমদ্ভগবদগীতার আদর্শ অনুসরণ করে কর্ম করার জন্য প্রস্তুত।” পশ্চিমবঙ্গে যে ধর্মীয় ঔদ্ধত্য চলছে, তা শেষ করতে মানুষ এখন প্রস্তুত বলেও জানান সিভি আনন্দ বোস। গীতার এক-একটি শ্লোক উদ্ধৃত করে তা ব্যখ্যা করেন রাজ্যপাল। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে গীতার শ্লোক অনুযায়ী কী করণীয়, তাও জানান তিনি।

ব্রিগেডে লক্ষকন্ঠে গীতাপাঠের মঞ্চে বক্তৃতা দিচ্ছেন বাগেশ্বর বাবা ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ শাস্ত্রী। ছবি: এন‌এনডিসি

লক্ষকন্ঠের গীতাপাঠের ব্রিগেডে রাজ্য বিজেপির সকল শীর্ষ নেতানেত্রী উপস্থিত থাকলেও তাঁরা কেউই মঞ্চে স্থান পান নি। মাঠে ভিআইপিদের জন্য নামে নামে আসনে নির্দিষ্ট করা ছিল। তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিজের নির্দিষ্ট আসনে না বসে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মাটিতে বসে গীতাপাঠ করতে দেখা যায়। লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বহু সাধুসন্ত ও একাধিক ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

মাটিতে বসেই গীতাপাঠে মগ্ন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: এন‌এনডিসি

লক্ষকন্ঠে গীতাপাঠের ব্রিগেড থেকে কর্মযোগের দীক্ষা নিয়ে ঘরে ফিরে গেলেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। ২৬-এর লড়াই তাঁদের কাছে কুরুক্ষেত্র ধর্মযুদ্ধের মতোই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানালেন রাজ্য বিজেপির এক নেতা। ব্রিগেডের মাঠে লক্ষকন্ঠে ধ্বনিত গীতার বাণী আসন্ন ভোটযুদ্ধে তাঁদের অনুপ্রাণিত করবে বলে মনে করেন তিনি।

Feature Image: NNDC.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *