খগেন-শঙ্করের উপর হামলার ঘটনায় ধৃত চার, আরও কয়েকজনকে খুঁজছে পুলিশ

খগেন-শঙ্করের উপর হামলার ঘটনায় ধৃত চার, আরও কয়েকজনকে খুঁজছে পুলিশ


ভিডিও: বন্যা বিধ্বস্ত নাগরাকাটায় ত্রাণ দিতে গিয়ে হামলায় আহত সাংসদ খগেন মুর্মু। সংগৃহীত ফুটেজ

ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ ৬ জনকে খুঁজছে বলে জানা গেছে। বুধবার দুপুরে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে নাগরাকাটা ব্লকের সুলকাপাড়ার খয়েরবাড়িতে অভিযান চালিয়ে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দলের সাংসদ ও বিধায়ক আক্রান্ত হ‌ওয়ার পরেই মোট ৮ জনের নাম উল্লেখ করে নাগরাকাটা থানায় অভিযোগ করেন জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। প্রথমে ঢিলেমি করলেও পরে চাপের মুখে ঘটনার তদন্তে গতি আনে পুলিশ। হামলার ৫৪ ঘন্টা পরে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে ধৃতদের নাম ‘এফ‌আইআর’-এ আছে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

ধৃত চারজনের নাম এক্রামুল হক, গোবিন্দ শর্মা, শাহানুর আলম (৩০) ও তোফায়েল হোসেন (৩৬)। রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বের অভিযোগ, দলের সাংসদ-বিধায়কের উপর হামলার ঘটনায় সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেস জড়িত। শাসকদলের সঙ্গে জড়িত একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের দুষ্কৃতীরা আদিবাসী সাংসদ খগেন মুর্মুকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। খগেন মুর্মু-শঙ্কর ঘোষের উপর আক্রমণ ও খগেনের রক্তাক্ত শরীরের ভিডিও ভাইরাল হতেই রাজ্য তো বটেই দেশের রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় ওঠে।

ভিডিও: ধৃতদের জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের কোর্ট লক‌আপে ঢোকানো হচ্ছে। সংগৃহীত ফুটেজ

ঘটনার উদ্বেগ জানিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে বেশ লম্বা পোস্ট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সাংসদ ও বিধায়কের জীবন সংশয়ের মতো পরিস্থিতি তৈরি হ‌ওয়ায় রাজ্য প্রশাসন ও তৃণমূল সরকারের দিকে আঙুল তোলেন প্রধানমন্ত্রী। নবান্নের উপর চাপ আসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও। সাংসদ খগেন মুর্মুর উপর হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারে রাজ্যের পুলিশ কী পদক্ষেপ করেছে, মুখ্যসচিবের কাছে জবাব চান লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।

খগেন ও শঙ্করের উপর হামলায় দলের কেউ জড়িত নয় বলে আত্মপক্ষ সমর্থনে মাঠে নামে তৃণমূল। প্রধানমন্ত্রীর পোস্টের কড়া জবাব দেন মমতা। তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ঘটনাটিকে জনরোষ বলে চালাতে চেষ্টা করলেও ঘটনা পরম্পরা তা ইঙ্গিত করছে না। দিদি দিদি রব তুলে তাঁদের উপর হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। উত্তরবঙ্গ বিজেপির শক্ত ঘাঁটি। আদিবাসী অধ্যুষিত নাগরাকাটা বিধানসভাও বিজেপির দখলে। বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপি যাতে মানুষের সহানুভূতি কুড়োতে না পারে, সেই লক্ষ্যেই পরিকল্পনা মাফিক এই হামলা করা হয়ে থাকতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।

বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও সাংসদ খগেন মুর্মু এখন‌ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর বাম চোখের নিচের হাড় ভেঙে গেছে। ভাঙা জায়গায় প্লেট বসানোর কথা ভাবছেন ডাক্তারেরা। খগেন মুর্মুর হামলার ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকার যে বেশ ব্যাকফুটে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

Feature image: NNDC.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *