পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে পুরোদস্তুর যুদ্ধ লেগে যাওয়ার পরিস্থিতি। এ’দিকে দুই আব্বুতে ঝামেলা বেধে যাওয়ায় বেজায় মুশকিলে পড়েছে বাংলাদেশীরা। তালিবানেরা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের বিরাট সংখ্যক মানুষের মধ্যে আফগানিস্তানের চাহিদা হুঁ হুঁ করে বেড়ে যায়। আর ভারত বিরোধিতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অনেক দিন ধরেই বাংলাদেশে পাকিস্তানের জনপ্রিয়তা ক্রমবর্ধমান। ৫ অগাস্টের পর থেকে তো বাংলাদেশের কমপক্ষে ৬০-৭০ শতাংশ মানুষ একাত্তরে খানসেনারা যে তাদের দাদিদের গণহারে ধর্ষণ করেছিল সেই স্মৃতি ভুলে গিয়ে পাকিস্তানের পেয়ারে রীতিমতো ফিদা। যারা আফগানিস্তানের আসেক ও তালিবানকে মুরিদ মানে তাদের অধিকাংশই ওয়াজি হুজুরদের দ্বারা প্রভাবিত গোড়া ধর্মান্ধ ও কাঠমোল্লা গোছের। কিন্তু পাকিস্তানপ্রেমীদের মধ্যে সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র, শিক্ষক, ইউটিউবার, সোস্যাল ইনফ্লুয়েন্সার ও রাজনীতিবিদ সহ সব শ্রেণী ও পেশার মানুষ আছে।
হাসিনাকে উৎখাত করার পর থেকে যারা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিস্টার্সকে রোজই খেয়ে নেয়, তাদের কলিজায় পাকিস্তান-আফগানিস্তানে গোলাগুলির খবর কীভাবে সহ্য হয়! দুই ইসলামিক রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ হলে কে গাজী আর কে শহীদ, কে জান্নাত পাবে আর কে জাহান্নামে যাবে, এটার ফয়সালা না করতে পেরে বাংলাদেশের বহু মানুষের টাকনু থেকে টাকরা পর্যন্ত গরম হওয়ার জোগাড়। শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর বাংলাদেশের প্রায় সমস্ত সংবাদ মাধ্যম পাল্লা দিয়ে হাসিনা ও ভারত বিরোধিতার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। যখন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সাফল্যের সিলসিলা বেশি বেশি করে প্রচার করা প্রয়োজন, তখন এই দুই আব্বুর মারামারির খবর জনগণকে জানান দেওয়াটা যে কত বড় কষ্টের, তা জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশের পাল্টিবাজ সাংবাদিকেরাই ভাল জানেন।
বাংলাদেশে এখন জনতা মাত্রেই তৌহিদী। কমেন্ট বক্স তৌহিদী জনতার আহাজারিতে ভরে যাচ্ছে। আল্লাহ তায়ালা কেন আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের শাসকদের হেদায়েত দান করেন না, এই আফশোস করতে করতে তাদের অনেকেরই গলা দিয়ে ভাত নামে না। একে তো ইন্ডিয়া থেকে আমদানি করা চালের ভাত। গাজওয়াতুল হিন্দের জন্য প্রস্তুতি না নিয়া ঈমানদারগণ পাক-আফগান সীমান্তেই সব গোলাগুলি খরচা করে ফেলতেসে, এই খবর কানে যাওয়ার পর কি আর ইন্ডিয়ান চাউলের ভাত বাংলাদেশী বান্দাদের মুখে রোচে? তার উপর ভারতের বেশরম মালাউন দাদারা কমেন্ট সেকশনে যাইচ্চা আইসা কাটা ঘায়ে লবণ ছিটায়া দিয়া যাইতাসে। কী মুসিবতেই না আল্লায় ফেলাইল!
আফগানিস্তানের গ্রামে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর বোমা বর্ষণে ৪৬ জনের মৃত্যু। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু বলে তালিবান কর্তৃপক্ষের দাবি। দুই আব্বার লড়াই। তাই রাজুতে আসার দরকার নাই।
Feature graphic is representational and designed by NNDC.