কলকাতা: বরাহনগর বিধানসভা আসনে কাউন্সিলর সজল ঘোষকে প্রার্থী করল বিজেপি। তাপস রায় বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় উপনির্বাচন হচ্ছে ওই আসনে। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া তাপস উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে পদ্ম প্রতীকে সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবতীর্ণ। ১ লা জুন সপ্তম দফায় উত্তর কলকাতা কেন্দ্রে ভোট। একই দিনে ভোটগ্রহণ করা হবে বরাহনগর বিধানসভার উপনির্বাচনেও। তৃণমূলের বিধায়ক ইদ্রিস আলির মৃত্যুতে উপনির্বাচন হচ্ছে মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা বিধানসভা আসনেও। ভগবানগোলায় ভাস্কর সরকারকে প্রার্থী করেছে বিজেপি।
তাপস রায় বিজেপিতে যোগদানের আগে পর্যন্ত উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে পদ্মের টিকিটের সবথেকে বড় দাবিদার ছিলেন কলকাতা পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সজল ঘোষ। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাবা প্রদীপ ঘোষের সঙ্গেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া পরিশ্রমী সজল নিজের যোগ্যতাতেই অল্প দিনে পদ্ম শিবিরের বড় মুখ হয়ে উঠেছেন। মিথ্যে মামলায় ঘরের দরজা ভেঙে গ্রেফতার করিয়েও সজলের উঁচু মাথা নোয়াতে পারেন নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বরং এই ঘটনার পর এলাকায় তাঁর জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যায়। একুশের ডিসেম্বরে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে পদ্ম ফুটিয়েছেন সজল ঘোষ। এরপর থেকেই রাজ্য বিজেপিতে সজলের কদর বাড়তে থাকে। সুবক্তা সজল এখন বঙ্গ বিজেপির অন্যতম মুখ। উত্তর কলকাতায় দলের সাংগঠনিক শক্তি বিস্তারে বড় ভূমিকা রাখা সজলের সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গাপূজার উদ্বোধনে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্বয়ং।
তাপস রায় ও সজল ঘোষ দু’জনেই উত্তর কলকাতার বউবাজার এলাকার বাসিন্দা। তাপসের সঙ্গে সজলের ব্যক্তিগত সম্পর্কও যথেষ্ট ভাল। একসময় তাপস রায়ের নেতৃত্বেই ছাত্র পরিষদের রাজনীতি করেছেন প্রদীপপুত্র। বলা চলে, দু’জনের মধ্যে গুরু-শিষ্যের সম্পর্ক। যে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কারণে তৃণমূলে কোনঠাসা হয়ে ২৪ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে তাপসের বিজেপিতে যোগদান, সেই সুদীপের কারণেই প্রদীপ ও সজল ঘোষের বিজেপিতে আসা বলে জনশ্রুতি। উত্তর কলকাতা কেন্দ্রে পদ্মের টিকিটের নিশ্চয়তা পেয়েই গত ৬ মার্চ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাপস রায়। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগেই বরাহনগরের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের টিকিটের বদলে তাপসের ছেড়ে দেওয়া বরাহনগর বিধানসভা আসনে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে সজলের নাম ঘোষণা ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
তাপস রায় ও সজল ঘোষ দু’জনেই নিজের নিজের এলাকায় জনপ্রিয় এবং দু’জনেরই সাংগঠনিক দক্ষতা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। উত্তর কলকাতায় তাপসের প্রচারে সজল যেমন বড় ভূমিকা রাখবেন বরাহনগরে সজলের প্রচারে তাপসও তেমনি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। একুশের বিধানসভা ভোটে বরাহনগরে বিশাল ব্যবধানে জিতেছিলেন ঘাসফুলের তাপস রায়। উপনির্বাচনে একই রকম ব্যবধানে জিতে তিনি বরাহনগরে পদ্ম ফোটাবেন বলে আশাবাদী সজল ঘোষ।
Feature graphic is representational and created by NNDC.