কলকাতা: সন্দেশখালিতে যাওয়ার পথে বাসন্তী হাইওয়েতেই আটকে দেওয়া হল বিজেপি বিধায়কদের বাস। সোমবার দুপুরে বিধানসভা চত্বর থেকেই বাসে চেপে দলের বিধায়কদের নিয়ে সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সন্দেশখালি থেকে ৬০ কিলোমিটার আগেই বাসন্তী হাইওয়ের উপরে বিজেপি বিধায়কদের বাসটি ব্যারিকেড করে আটকে দেয় পুলিশ। বিধায়কদের নিয়ে বাসেই বসে রয়েছেন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতা বলেন, “যেতে না দিলে রাস্তাতেই বসে থাকব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পেয়েছেন। ভয়ে থরথর করে কাঁপছেন। তাই সন্দেশখালি যাওয়ার ৬০ কিলোমিটার আগেই আমাদের আটকে দেওয়া হল।”
এদিন সকালে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে সভা থেকে সাসপেন্ড হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপির ছয় বিধায়ক। বিধানসভায় এখন বাজেট অধিবেশন চলছে। শাস্তির ফলে বাজেট অধিবেশনে আর অংশ নিতে পারবেন না তাঁরা। বিধানসভার বাইরে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এই শাস্তি পেয়ে আমরা সম্মানিত। সন্দেশখালিতে এসসি-এসটি সম্প্রদায়ের মহিলাদের উপরে নির্যাতন চলছে। সাসপেন্ড করে মহিলাদের সম্মান রক্ষার লড়াই থেকে আমাদের সরানো যাবে না।” এরপর বেলা বারোটা নাগাদ বিধানসভা ভবনের সামনের রাস্তা থেকেই সন্দেশখালিতে যাবার জন্য দলের বিধায়কদের নিয়ে বাসে ওঠেন বিরোধী দলনেতা।
সন্দেশখালি রওনা দেওয়ার আগেই শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন, “১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সন্দেশখালিতে ঢুকবেন না বিজেপির বিধায়কেরা। কেবল দলের চার মহিলা বিধায়ক নির্যাতিতাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা করবেন।” নির্ধারিত কেরল সফর বাতিল করে সোমবারই সন্দেশখালি পরিদর্শনে গেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রবিবার ঘটনাস্থলে গিয়েছিল বামেদের একটি প্রতিনিধি দলও। শুভেন্দুর চাপের মুখেই রাজ্যপাল সন্দেশখালিতে গেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেছেন সিভি আনন্দ বোস। এদিকে শুভেন্দু অধিকারী ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করার আশ্বাস দিলেও বিজেপি বিধায়কদের সন্দেশখালিতে ঢুকতে দিল না পুলিশ।
এই নিয়ে প্রশ্ন তুলে শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, “আমরা শান্ত ভাবে কথা বলতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু তার আগেই আটকে দেওয়া হল। সিপিএমকে ঢুকতে দেওয়া হয়। রাজ্যপালকে ঢুকতে দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের ঢুকতে দেওয়া হল না।’’ বাসে বসে থেকেই তিনি আরও বলেন, “এখানে ১৪৪ ধারা নেই। তারপরেও কেন আমাদের আটকানো হল বুঝতে পারছি না। আমরা এখানেই বসে থাকব।’’
সায়েন্স সিটির কাছে প্রায় চার ঘণ্টা রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে থাকে বিজেপি বিধায়কদের বাস। এক সময় বাস থেকে নেমে শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপির বিধায়কেরা রাস্তার উপরে বসে পড়েন। বিকেলে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, “আগামী ১৫ তারিখ ( বৃহস্পতিবার) বেলা বারোটায় আবার অ্যাসেম্বলি গেট থেকে সন্দেশখালি যাবো। সেদিন দেখবো বিনীত গোয়েলের পুলিশ কীভাবে আটকায়।” এই হুঁশিয়ারি দিয়েই বাসে উঠে দলের ৬৪ জন বিধায়ককে নিয়ে কলকাতায় ফিরে আসেন শুভেন্দু।