ইসলামপুর: রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় সংঘর্ষে প্রাণ গেল একজনের। বাম-কংগ্রেসের মিছিলে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ। মিছিলে অংশগ্রহণকারী তিনজনের দেহে গুলি লাগে বলে জানা গেছে। ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে এক গুলিবিদ্ধের মৃত্যু হয়। আরও একজনের অবস্থা সঙ্কটজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ চোপড়ার লালবাজার এলাকা থেকে মিছিল করে বিডিও অফিসের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন বাম-কংগ্রেসের প্রার্থীরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন দুই দলের কয়েকশত কর্মী-সমর্থক। চোপড়া বিডিও অফিস থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে কাঁঠালবাড়ি কলোনি এলাকায় মিছিলের উপর আক্রমণ নেমে আসে তৃণমূলের লোকেরা মিছিল এগিয়ে যেতে বাধা দেয় বলে বাম-কংগ্রেসের অভিযোগ। বাধা উপেক্ষা করে বাম-কংগ্রেসের সমর্থকেরা এগিয়ে যেতেই মিছিল লক্ষ্য করে গুলি ছুটে আসে। সামনে থাকা কয়েকজন লুটিয়ে পড়লে মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
মনোনয়ন পর্বের শুরু থেকেই চোপড়া এলাকায় তৃণমূল সন্ত্রাস চালাচ্ছে বলে বাম-কংগ্রেসের অভিযোগ। বুধবারও মনোনয়ন জমা করতে বিরোধী প্রার্থীদের বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে। শেষ দিন তৃণমূলের বাধা প্রতিরোধের সঙ্কল্প নিয়েই একত্রে লালবাজার থেকে বড় মিছিল করে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন স্থানীয় বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব। কাঁঠালবাড়ি এলাকায় তাদের আটকাতে আগে থেকেই জড়ো হয়েছিল তৃণমূলের লোকেরা। কিন্তু মিছিলের বহর দেখেই শাসকদলের দুষ্কৃতীরা বুঝে যায় সহজে বাম-কংগ্রেসের সমর্থকদের পিছু হটানো যাবে না। বাম-কংগ্রেসের প্রতিরোধের মুখে কোনঠাসা হয়ে পড়লে তৃণমূলের লোকেরা এলোপাথাড়ি গুলি বৃষ্টি শুরু করে। শাসকদলের দুষ্কৃতীদের হাতে বড় বড় বন্দুক ছিল বলে গুলিতে আহত একজন জানিয়েছেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকেই উত্তপ্ত বাংলা। মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রথম দিনেই মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে বাড়িতে ঢুকে এক ফুলচাঁদ শেখ নামে এক কংগ্রেস কর্মীকে গুলি করে মারে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনাতেও অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। ঘটনায় ১৫জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হলেও দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দু’জনেই তৃণমূলের কর্মী বলে জানা গেছে।
ভাঙড়, বসিরহাট, ক্যানিং, ন্যাজট, সন্দেশখালি সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় তৃণমূলের হামলার শিকার হচ্ছেন বিরোধী দলের প্রার্থীরা। মামলা হাইকোর্টে উঠলে বৃহস্পতিবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দিয়েছেন, যে সব বিরোধী প্রার্থী হামলার মুখে মনোনয়ন জমা দিতে পারেন নি; তাদের এসকর্ট দিয়ে বিডিও অফিসে নিয়ে গিয়ে মনোনয়ন জমা করানোর দায়িত্ব পুলিশের।
Feature Photo- Collected.