সব বিতর্ক পেরিয়ে বিহারে সফল, বাংলা সহ ১২ রাজ্যেও শুরু হয়ে গেল এস‌আইআর

সব বিতর্ক পেরিয়ে বিহারে সফল, বাংলা সহ ১২ রাজ্যেও শুরু হয়ে গেল এস‌আইআর


এ’দিন দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানান, “বিহারে এস‌আইআর খুব সফলভাবে শেষ হয়েছে। কেউ একটিও ভুল ধরতে পারেন নি। বিহারে সাড়ে সাত কোটি ভোটার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন। বিএল‌ও, বুথ লেভেল এজেন্ট সহ সকলে মিলে এই মহাযজ্ঞ সম্পন্ন করেছেন। খুবই শুদ্ধ এস‌আইআর হয়েছে সেখানে।” বিহারে এস‌আইআরে ৬৫ লক্ষ লোকের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। যোগ্য কোন‌ও ভোটার তালিকা থেকে বাদ না পড়ায় বিরোধীরা আর আওয়াজ তোলার সুযোগ পাচ্ছে না।

সোমবার দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনে দ্বিতীয় দফায় এস‌আইআর কর্মসূচি ঘোষণা করেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। পাশে দুই নির্বাচন কমিশনার সুখবীর সিং সান্ধু ও বিবেক যোশী। সংগৃহীত ফটো

পশ্চিমবঙ্গে এস‌আইআর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক হম্বিতম্বি করেছেন। বামপন্থীরাও এস‌আইআর নিয়ে বাজার গরম করছেন। কিন্তু গলাবাজি করে এস‌আইআর আটকানো সম্ভব নয়। এসাআইআর শুরু করার যাবতীয় প্রস্তুতি আগেই শেষ করে ফেলেছে নির্বাচন কমিশন। বিএল‌ও সহ রাজ্য সরকারের কোনও কর্মচারী এস‌আইআরের কাজে সহযোগিতা না করলে তাঁদের পরিণতি কী হতে পারে, তা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করে দিয়েছে কমিশন। এস‌আইআর নিয়ে নির্দেশ না মানায় বাংলায় চার আধিকারিককে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। নবান্ন প্রথমে কমিশনের নির্দেশ কার্যকর করতে অস্বীকার করলেও পরে অনেক টানাপড়েনের পর নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ করতে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত বারোটার পর থেকেই বাংলা সহ ১২ রাজ্যের ভোটার তালিকা ফ্রিজ হয়ে যাবে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া বাকি যে ১১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এস‌আইআর হচ্ছে- তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, গোয়া, গুজরাট, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, পুদুচেরি, আন্দামান-নিকোবর ও লাক্ষাদ্বীপ। মোট ৫১ কোটি ভোটারের তালিকা নিবিড় সংশোধনী করবেন কমিশনের কর্মীরা। তবে অসমে এস‌আইআর হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন জ্ঞানেশ কুমার। সেখানে এন‌আরসি চলছে ও এই প্রক্রিয়া প্রায় শেষের পথে। অসমে এন‌আরসি চলায় সেখানে এস‌আইআর-এর এখুনি কোন‌ও প্রয়োজনীয়তা দেখছে না নির্বাচন কমিশন।

কাদের কাগজ দেখাতে হবে না?

২০০৩ সালের ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের কোনও ধরণের নথি দেখাতে হবে না। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কার‌ও নিজের নাম না থাকলেও বাবা-মায়ের নাম ভোটার তালিকায় থাকলে, তাঁরাও কাগজ দেখানো থেকে রেহাই পাবেন। কমিশনের সাইটে গিয়ে ২০০৩ সালের ভোটার তালিকায় নিজের নাম আছে কিনা, দেখে নিতে পারেন যে কোনও ভোটার 

কোন কোন নথি গ্রাহ্য হবে?

১) কেন্দ্রীয় অথবা রাজ্য সরকারের কর্মী হিসাবে কাজ করার অথবা পেনশন সংক্রান্ত কোনও পরিচয়পত্র। ২) ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, এলআইসি, স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক ইস্যুকৃত যে কোনও নথি। ৩) জন্মের শংসাপত্র। ৪) পাসপোর্ট। ৫) মাধ্যমিক বা তার অধিক কোনও শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র। ৬) রাজ্য সরকারের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া বাসস্থানের শংসাপত্র। ৭) ফরেস্ট রাইট সার্টিফিকেট। ৮) জাতিগত শংসাপত্র। ৯) জাতীয় নাগরিক রেজিস্টার (যেখানে প্রযোজ্য)। ১০) স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া পারিবারিক রেজিস্টার। ১১) জমি অথবা বাড়ির দলিল। ১২) এ ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে পরিচয়পত্র হিসাবে আধার কার্ড দেখানো যাবে। তবে তা দেখিয়ে নাগরিকত্বের দাবি করা যাবে না। কমিশন জানিয়েছে, আধার কার্ডের সঙ্গে এই ১১টি নথির যে কোনও একটি দিতেই হবে। এই ১১টি নথির বাইরে কোনও নথি যদি নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারে, তবে তা-ও গ্রাহ্য হবে।

 

 

 

 


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *