কানে শোনাও পাপ এমন কথা বলেছিল কেষ্ট, তখন চুপ ছিলেন কেনে পুলিশের জায়া-জননী-ভগিনীরা?

কানে শোনাও পাপ এমন কথা বলেছিল কেষ্ট, তখন চুপ ছিলেন কেনে পুলিশের জায়া-জননী-ভগিনীরা?


শুভেন্দু অধিকারী প্রকাশ্য রাস্তায় সিপিকে ‘বরাহনন্দন’ বলেছেন শব্দটিকে চলিত বাংলায় অনুবাদ করে। বরাহনন্দনকে চলিত বাংলায় ফলাতে গেলে তা নিঃসন্দেহে কুৎসিত গালিতে পরিণত হয়। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার (রীতিমতো সাংবিধানিক পদ, মর্যাদায় ক্যাবিনেট মন্ত্রীর সমতুল্য) মুখে এই গালি শোভা পায় না তাই তা মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়। এবং আমরা শুভেন্দুর এই শব্দচয়নের নিন্দা জানাই। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডল বোলপুর থানার আইসিকে যা বলেছেন তা যে গালিগালাজের‌ও অনেক ঊর্ধ্বে!

একজন থানেদারের মা-ব‌উয়ের সঙ্গে বলপূর্বক যৌনসংসর্গ করার হুমকি দেওয়ার পরিণাম কী হ‌ওয়া উচিত? আইনমাফিক কী দন্ড প্রাপ্য তৃণমূলের সেই প্রভাবশালী নেতার? কানে শুনলেও পাপ হয়, এমন কুকথা এক পুলিশ আধিকারিককে বলার পরে যে ধরনের আইনি পদক্ষেপ অনুব্রতের বিরুদ্ধে নেওয়া উচিত ছিল, তা কি নেওয়া হয়েছে? অনুব্রত মণ্ডলের কুকথার প্রতিক্রিয়ায় মামলা-মোকদ্দমা তো বটেই এমনকি সামাজিক ঘৃণা, ছিঃ ছিক্কার‌ও আরও অনেক বেশি হ‌ওয়ার কথা।

বিরোধী দলনেতার মুখনিঃসৃত কুকথার প্রতিবাদে পুলিশের ঘরের স্ত্রী-কন্যা-মা ও বোনেরা পথে নেমেছেন। নেমে বেশ করেছেন। একশোবার নামা উচিত। কিন্তু একখান কথা আছে। তা, বোলপুরের আইসির সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের ফোনালাপ ভাইরাল হ‌ওয়ার পর পুলিশের জায়া-জননী-ভগিনীরা কোথায় ছিলেন? তাঁদের তো ক্রোধে রণচন্ডী রূপ ধারণ করে আঁশবটি নিয়ে নিচুপট্টির উদ্দেশ্যে দলবেঁধে র‌ওনা দেওয়া উচিত ছিল।

কেউ কেউ অবশ্য বলতে পারেন, অনুব্রত মণ্ডল আর শুভেন্দু অধিকারী কি সমান? তা বটে। কিন্তু তারপরেও দুই খান কথা আছে। শুভেন্দু বিরোধী দলনেতা কিন্তু কেষ্ট কম কীসে? তিনি বীরভূমে কার ছায়া, তা তো আমরা সবাই জানি। কেউ কেউ আবার বলছে, কেষ্টদা তো প্রকাশ্য রাস্তায় মাইক ফুঁকে বলেন নি, আইসিকে ডোজ যা দেওয়ার একান্তে ফোনে দিয়েছেন। সে দিক থেকে বিচার করলে দোষ অবশ্য আইসির। ভদ্রলোক পুলিশের চাকরি করে না জানি কার উস্কানিতে শাসকদলের দোর্দন্ডপ্রতাপ নেতার সুবচন হজম না করে কল রেকর্ড করে বাজারে ছেড়ে দেওয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছেন!

ঘটনা যাই হোক, ওই রকম অতি উচ্চ মার্গের একটা কল রেকর্ড ভাইরাল হ‌ওয়ার পর পুলিশের মা-বোন-ব‌উয়েরা কীভাবে চুপ থাকলেন, সেই প্রশ্ন তো আমাদের মতো ছিদ্রান্বেষীরা তুলবেই। পুলিশের কলকাতাস্থ জননী-জায়া-ভগিনীদের কথা না হয় ছেড়েই দিলাম। বীরভূম জেলা এমনকি বোলপুরের পুলিশের জননী-জায়া-ভগিনীরা তাঁদের গাত্রদাহ চেপে রেখে ঘরে বসেছিলেন কেন?


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *