খামখেয়ালী, অস্থিরমতি, বাচাল, অপরিণামদর্শী, হঠকারী এবং যাকে বলে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ ব্যক্তি রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে শেষ পর্যন্ত ভাল হয় না। না এঁরা নিজের রাষ্ট্রের ভাল করেন না নিজের পলিটিক্যাল কেরিয়ারের। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে উপরের সবগুলো দোষ বা বদগুণ বিদ্যমান। আমেরিকার ইতিহাসে ট্রাম্পের মতো বাচাল আর কোনও প্রেসিডেন্ট আগে এসেছে বলে মনে হয় না। আব্রাহাম লিংকন, থিওডোর রুজভেল্ট, থমাস উড্রো উইলসন ও ফ্র্যাঙ্কলিন ডেলানো রুজভেল্টের মতো বিচক্ষণ, দূরদর্শী ও বিদগ্ধ নেতারা যে দেশের প্রেসিডেন্ট ছিলেন; সেই দেশে বাইডেন ও ট্রাম্পের মতো ‘সাব স্ট্যান্ডার্ড’ পলিটিশিয়ান কীভাবে প্রেসিডেন্ট হন কে জানে!
ডোনাল্ড ট্রাম্প নিঃসন্দেহে ভাল প্লেবয়। কিন্তু প্লেবয়ের পটুত্ব দিয়ে আমেরিকার মতো ‘সুপার পাওয়ার’ রাষ্ট্র চালানো যায় না। পর্নস্টারের বিছানায় যে মাস্টারস্ট্রোক চলে সেই মাস্টারস্ট্রোক মেরে আর যাই হোক রাষ্ট্রনীতি, কূটনীতি পরিচালনা করা যায় না। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, অবুঝ মিত্রর চেয়ে বুঝদার শত্রুও ভাল। ট্রাম্পের মতো বন্ধু থাকলে শত্রুর দরকার পড়ে না। ট্রাম্পের জামানায় ভারত-মার্কিন সম্পর্কের চরম অবনতি হওয়ার ঝুঁকি আছে। কারণ, ট্রাম্প আনপ্রেডিক্টেবল। বাচাল, অস্থিরমতি ও খামখেয়ালী ট্রাম্পের পরের পদক্ষেপটা কী হবে, তা আঁচ করা খুব শক্ত।
ডোনাল্ড ট্রাম্প পড়েছেন আরেক খ্যাপাটে, অস্থিরমতি ও বাচাল ব্যবসায়ী ইলন মাস্কের খপ্পরে। খ্যাপাটে রাজা ইতিহাসে বহু দেখা গেছে। কিন্তু সফল ব্যবসায়ীও যে ছিটেল হয়, তা শিল্প-বাণিজ্যের পৃথিবীতে মাস্কের উদয় না হলে আমরা জানতে পারতাম না। ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক নিয়ে এমন সময় সব দেশের সঙ্গে বাড়াবাড়ি শুরু করেছেন, যখন বিশ্ব অর্থনীতির উপরে আমেরিকার নিয়ন্ত্রণ আর আগের মতো নেই। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইলন মাস্ককে পাশে বসিয়ে যে ভাষায় সাংবাদিকদের সামনে ভারত ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, তা মোটেই কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও রাষ্ট্র নায়কোচিত নয়। আমাদের অতি পরিচিত এক মুখ্যমন্ত্রীর বাচনভঙ্গির সাথে বেশ মিল আছে। বাণিজ্য নীতি নিয়ে ট্রাম্পের অবিমৃশ্যকারিতা চরমে উঠলে তা ভারত-চিন-রাশিয়াকে এক মঞ্চে এনে দাঁড় করাবে না, তা কে বলতে পারে!