কলকাতা: সন্দেশখালির আঁচ বিধানসভায়। সোমবার সন্দেশখালির ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ ছয় বিজেপি বিধায়ক। বাকি বিধায়কদের মধ্যে আছেন অগ্নিমিত্রা পাল, বঙ্কিম ঘোষ, তাপসী মন্ডল, শঙ্কর ঘোষ ও মিহির গোস্বামী। চলতি বাজেট অধিবেশনে তাঁরা আর অংশ নিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
শেখ শাহজাহানের সাম্রাজ্য সন্দেশখালি অনেক দিন ধরেই সংবাদ শিরোনামে। শাহজাহান ফেরার থাকলেও তার সাঙ্গপাঙ্গরা থেমে নেই। তাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে এবার জনরোষ ধূমায়িত হতেই সন্দেশখালির পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। হাড় হিম করা সন্ত্রাস ও নারী নির্যাতনের সব খবর আসছে সন্দেশখালি থেকে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে কথা নেই। ঘটনার প্রতিবাদে বিধানসভার ভেতরে ও বাইরে সরব থাকতে চাইছে রাজ্য বিজেপি। বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন চলছে। সোমবার অধিবেশন বসা মাত্রই যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হবে, সেই ইঙ্গিত আগে থেকেই ছিল।
এ দিন অধিবেশন বসতেই ‘সন্দেশখালি সাথে আছি’ লেখা টিশার্ট পরে কক্ষে ঢোকেন বিজেপি বিধায়কেরা। তাঁদের মুখে ছিল ‘সন্দেশখালি জ্বলছে, মমতা হাসছে’ স্লোগান। অনেকে হুইসেলও বাজাতে থাকেন। সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর জবাব দাবি করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতার দাবি খারিজ করে দেন অধ্যক্ষ। প্রতিবাদে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখাতে দেখাতে সভা থেকে ওয়াকআউট করেন বিজেপির বিধায়কেরা।
বিধানসভার অধিবেশন কক্ষ থেকে বিরোধী বিধায়কেরা বেরিয়ে যাওয়ার পর স্পিকারের কাছে বিজেপির গোটা পরিষদীয় দলটাকেই সাসপেন্ড করার প্রস্তাব দেন বিধানসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ। পরে সেই প্রস্তাব সংশোধন করে শুভেন্দু সহ বিজেপির ছয় বিধায়ককে বহিষ্কার করার আর্জি জানান পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বহু দিন ধরেই বিজেপি পরিষদীয় দলের অভিযোগ, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় নিরপেক্ষ নন। এদিনও শোভনদেবের প্রস্তাব পাওয়া মাত্রই শুভেন্দু সহ ছয় বিরোধী বিধায়ককে গোটা অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করে দেন স্পিকার। এর আগেও ২০২২-এর ২৯ মার্চ বগটুইয়ে গণহত্যার প্রতিবাদে সরব হওয়ায় শুভেন্দু সহ পাঁচ বিরোধী বিধায়ককে গোটা বাজেট অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করেছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধানসভার বাইরে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় আসাই প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন। কোনও বড় ঘটনা ঘটলেও সদনে এসে বক্তব্য দেন না। আজ পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিজেপি বিধায়কদের উত্থাপিত কোনও প্রশ্নের জবাব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে মেলে নি। আজ সন্দেশখালি জ্বলছে। জবাব দিতে হবে বলে বিধানসভায় উপস্থিত নেই মুখ্যমন্ত্রী। এই নিয়ে প্রশ্ন তোলায় আমাদের সাসপেন্ড করা হয়েছে।” এইভাবে সাসপেন্ড করে সন্দেশখালির মা-বোনেদের সম্মান রক্ষার লড়াই থেকে তাঁদের সরানো যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শুভেন্দু।
Feature graphic is representational.