ডেস্ক রিপোর্ট: ইভিএম নিয়ে অনেক দিন মুখ বন্ধ রেখেছিলেন। বিশেষ করে একুশে বিশাল জয় হাঁকিয়ে নবান্নে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে ইভিএম নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য শোনা যাচ্ছিল না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। বৃহস্পতিবার সেই মৌনতা ভাঙলেন তিনি। নবান্নের সভাঘরে বসে ভার্চুয়ালি কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন-শিলান্যাস অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েই মুখ্যমন্ত্রী তোপ দাগেন বিজেপির বিরুদ্ধে। মমতার অভিযোগ, “চব্বিশে জিততে এখন থেকেই নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে ওরা।” মমতা বলেন, ইভিএম হ্যাক করার নানারকম ব্যবস্থা করছে বিজেপি।” তাঁর হাতে সেই প্রমাণও এসে গেছে বলে দাবি করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কিছু প্রমাণ পেয়েছি। কিছু খুঁজছি। ‘ইন্ডিয়া’র পরবর্তী বৈঠকে সে’সব নিয়ে আলোচনা হবে।”
উনিশের লোকসভা নির্বাচনে দল খারাপ ফল করতেই ইভিএমের বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠেছিলেন মমতা। ইভিএম সরিয়ে ব্যালটে ফেরার দাবি নিয়ে আন্দোলনও শুরু করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেস, আপ, বাম সহ আরও কয়েকটি বিরোধী দলও মমতার কথায় সায় দিয়ে ইভিএম হঠানোর আওয়াজ তুলেছিল। যদিও ইভিএম হ্যাকের আশঙ্কা অমূলক বলে খারিজ করে দিয়েছিল কমিশন। উনিশের লোকসভা জিততে মোদী ইভিএম হ্যাক করিয়েছিলেন- এইরকম একটা অভিযোগ সে’সময় কংগ্রেস শিবির থেকেও চাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। ইভিএম নিয়ে বিরোধী দলগুলির অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে ইভিএম হ্যাক করে দেখানোর চ্যালেঞ্জ পর্যন্ত রেখেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু কোনও দলই কমিশনের চ্যালেঞ্জ স্বীকার করে নি।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসনে জেতার পর তৃণমূলের মুখে ইভিএম নিয়ে অভিযোগ বন্ধ হয়। একাধিক রাজ্যের নির্বাচনে কংগ্রেসে, আপ বিজয়ী হয়। সাম্প্রতিক সময়ে এই দলের মুখেও ইভিএম নিয়ে কোনও শঙ্কার কথা শোনা যায় নি। তবে বৃহস্পতিবার থেকে ফের ইভিএম নিয়ে পুরোনো সুর তুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেছেন, “ইভিএম হ্যাক করার কিছু প্রমাণ পেয়েছি। আর কিছু প্রমাণ খুঁজছি।” তিনি কী প্রমাণ পেয়েছেন, তা খোলসা করে সাংবাদিকদের জানান নি। তবে জোটের সামনের বৈঠকে এই প্রসঙ্গ তিনি তুলবেন বলে জানিয়েছেন। সেখানে প্রমাণ পেশ করবেন কিনা, এখন এটাই দেখার।
রাজনৈতিক মহল অবশ্য মমতার এই ধরণের দাবিতে আশ্চর্য নয়। কারণ, অতীতে অসংখ্যবার এই ধরণের দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আমার কাছে প্রমাণ আছে বলে দাবি করার পরেও কখনও দাবির সপক্ষে কোনও প্রমাণ দেন নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগকে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। রাহুল সিনহা কটাক্ষ করে বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পেরে গেছেন যে, মোদীজিই ক্ষমতায় ফিরবেন। তাই এখন থেকেই হ্যাক হ্যাক করে চেঁচামেচি শুরু করেছেন।”
Feature image/graphic is representational.