সায়েন্স ডেস্ক: চাঁদের দক্ষিণ মেরু পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান নয়। এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ মেরুতে নামতে পারে নি পৃথিবীর কোনও মহাকাশযান। রুশ মহাকাশযান ‘লুনা-২৫’ একবারে শেষ মুহূর্তে গতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে রবিবার দুপুরে চাঁদের বুকে ভেঙে পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তবে রবিবার ভারতীয় সময় রাত পৌনে দুটো নাগাদ শেষবারের মতো কক্ষপথ পরিবর্তন করে একেবারে চাঁদের দোরগোড়ায় ভারতের চন্দ্রযান-৩। আগামী বুধবার (২৩ অগাস্ট) সন্ধ্যা ৬টা বেজে ৪ মিনিটে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ চাঁদের মাটিতে নামবে বলে টুইট করে জানিয়ে দিল ‘ইসরো’। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামার কথা ‘বিক্রম’-এর। অবতরণ সফল হলে মহাকাশ গবেষণায় নতুন ইতিহাস রচনা করবে ভারত।
ইতিহাসের সাক্ষী হতে বেঙ্গালুরুর ইউআর রাও স্যাটেলাইট সেন্টারে দেশি-বিদেশি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসরো। ইসরোর ওয়েবসাইট, ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল থেকেও ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-এর অবতরণ প্রক্রিয়ার ‘লাইভ’ সম্প্রচার করা হবে। সংস্থার ভেরিফায়েড এক্স হ্যান্ডেলে ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবের লিঙ্কগুলি দিয়েছে ইসরো।
ওয়েবসাইট- isro.gov.in
ফেসবুক – facebok.com/ISRO
ইউটিউব – youtube.com/watch?v_DLA_64yz8Ss
শনিবার ভারতীয় সময় রাত পৌনে দুটো নাগাদ শেষবারের মতো কক্ষপথ পরিবর্তন করে যে দূরত্ব থেকে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ সম্ভব, সেই দূরত্বে চলে এসেছে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। এখন ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ ২৫ কিমি×১৩৪ কিমি কক্ষপথে চাঁদকে প্রদক্ষিণ করছে বলে জানিয়েছে ইসরো। অর্থাৎ ল্যান্ডারটি যখন চাঁদের একদম কাছে চলে আসছে, তখন চন্দ্রপৃষ্ঠের সঙ্গে সেটার দূরত্ব দাঁড়াচ্ছে মাত্র ২৫ কিলোমিটার, যখন সবথেকে দূরে সরে যাচ্ছে, তখন দূরত্ব হচ্ছে ১৩৪ কিলোমিটার। ল্যান্ডার মডিউলের’ আর কোনও কক্ষপথ পরিবর্তন হবে না। এবার ২৫ কিলোমিটার উচ্চতা থেকে ধীরে ধীরে গতি কমিয়ে ল্যান্ডারটিকে চাঁদের মাটিতে নামিয়ে আনার পালা। মহাকাশ বিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে বলা হয় মহাকাশযানের ‘সফ্ট ল্যান্ডিং’।সফ্ট ল্যান্ডিং সফল হলেই কেবল চাঁদের মাটিতে নেমে অক্ষত থাকবে ল্যান্ডার বিক্রম। বিক্রমের পেটে আছে রোভার ‘প্রজ্ঞান’। ধীরে ধীরে ল্যান্ডারের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসবে প্রজ্ঞান।
রোভার ‘প্রজ্ঞান’একটি রোবোটিক যান। স্বয়ংক্রিয় এই যানটির ছয়টি চাকা। ২৬ কেজি ওজনের যানটিতে রয়েছে চন্দ্রবক্ষে গবেষণা চালানোর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি। পার্থিব দিনের হিসেবে ১৪ দিন এই যানটি চাঁদের মাটিতে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করবে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর ভূস্তরের গঠন কাঠামো জানার চেষ্টা করবে প্রজ্ঞান রোভার। এখনও পর্যন্ত আমেরিকা, রাশিয়া ও চিন চাঁদের মাটিতে যান নামিয়েছে। বুধবার ইসরোর চন্দ্রাভিযান সফল হলে ভারত হবে চাঁদের মাটিতে গবেষণা চালানো পৃথিবীর চতুর্থ দেশ।
Feature image credit- ISRO.