ডেস্ক রিপোর্ট : ভোটের প্রচারে বেরিয়ে বহুবার মোদীকে আম্বানি-আদানির দালাল বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসে নিজেকে বিনিয়োগবান্ধব মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরতে মরীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সদ্যই মুম্বাইয়ে শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠক সেরে ফিরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী । বৃহস্পতিবার সটান নবান্নেই হাজির আদানি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান গৌতম আদানি। গুজরাটি শিল্পপতি গৌতম আদানিকে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের খাতিরের লোক বলে কটাক্ষ করেন বিরোধীরা। তাতে সুর মেলান মমতা সহ তৃণমূলের অন্যান্য নেতারাও । এহেন নিন্দিত আদানির সঙ্গে দশ-বিশ মিনিট নয় টানা দেড় ঘণ্টা মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করেছেন বলে জানা গেছে। নিজে ট্যুইট করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা জানিয়েছেন গৌতম আদানি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে তিনি উৎফুল্ল বলে ট্যুইটারে জানিয়েছেন আদানি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান। পশ্চিমবঙ্গের বিনিয়োগ পরিস্থিতি ও বিপুল সম্ভাবনার দিকগুলি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়েছে বলে লিখেছেন গৌতম আদানি। আগামী এপ্রিলে অনুষ্ঠেয় বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে যোগ দেওয়ার জন্য তিনি মুখিয়ে আছেন বলেও জানিয়েছেন আদানি।
নিন্দিত আদানি নন্দিত হওয়ায় তৃণমূল সুপ্রিমোকে ঠুকতে ছাড়ছে না বাম-কংগ্রেস। হঠাৎ কোন মন্ত্রবলে আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার মমতার আস্থাভাজন হয়ে গেল তা জানতে চাইছেন বাম ও প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা। তবে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজ্যের হাল ফেরাতে বড় বিনিয়োগ ছাড়া গতি নেই , এটা বুঝতে পেরেই মাঠের রাজনীতি ঝেড়ে ফেলে বাস্তবের পথে হাঁটতে শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই বলে বিরোধীরা ছাড়বে কেন। বিশেষ করে মমতা যেভাবে পরিকল্পনা মাফিক কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে চলেছেন , তাতে অন্য রকম গন্ধও পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। বামেরা তো প্রকাশ্যেই বলতে শুরু করে দিয়েছে, আম্বানি-আদানিদের ইশারাতেই বিজেপি বিরোধী ঐক্য ভেস্তে দিচ্ছেন মমতা। গৌতম আদানির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেড় ঘণ্টা ব্যাপী দীর্ঘ বৈঠকের খবরে চাপা হাসি মুরলীধর সেন লেনের গেরুয়া বাড়ির লোকজনের মুখেও । গুজরাটি মুকেশ আম্বানির সঙ্গে মমতার বোঝাপড়া বরাবরই ভাল । এইবার আরেক গুজরাটি গৌতম আদানির সঙ্গেও ভাইচারা হয়ে গেল । এরপর থেকে তৃণমূলের নেতানেত্রীরা কোন মুখে নরেন্দ্র মোদীকে গুজ্জু বলে গালমন্দ করেন সেটাই বোধ হয় দেখতে চাইছেন সুকান্ত মজুমদার-দিলীপ ঘোষেরা।
Photo Credit- Twitter.