সংসদের ভেতরেও কংগ্রেসের সঙ্গে আর সমঝোতায় রাজি নয় তৃণমূল। মল্লিকার্জুন খড়্গের ডাকা বৈঠক তৃণমূলের এড়িয়ে যাওয়া সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান । অধীর চৌধুরী কটাক্ষ করে বললেন, কোনও কোনও বিরোধী দল সরকারকে চটাতে চায় না দেখেই কংগ্রেসের সঙ্গে থাকে না।
ডেস্ক রিপোর্ট : সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রাক্কালে সমস্ত বিরোধী দলকে নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যসভায় কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে। পত্রপাঠ সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। খড়্গের বৈঠক এড়িয়ে যাওয়ায় তৃণমূলকে আরও একবার বিজেপির দালাল বলে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতার দায়িত্বও পালন করছেন অধীর। কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা তৃণমূলের নাম না করে বলেন, ” কোনও কোনও বিরোধী দল উপরে উপরে সরকারের বিরোধিতা করলেও তলে তলে তারা সরকারের সঙ্গেই রয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে এলে পাছে সরকার বিরোধী বলে পিঠে ছাপ পড়ে যায় এই ভয়ে সেই দলের নেতারা খড়্গের ডাকা বৈঠক এড়িয়ে গেলেন । ” অধীর চৌধুরী আরও বলেন, ” সরকারের সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হলেই তারা ( তৃণমূল ) সরে দাঁড়ায়। কিন্তু কংগ্রেস এমন করতে পারে না। ” মল্লিকার্জুন খড়্গের বৈঠকে না থাকার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকেও জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। অধীর চৌধুরী বলেন, ” তাঁরা ( তৃণমূল নেতারা ) বৈঠকে আসবেন কি আসবে না তা তাঁদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু সংসদীয় রীতিনীতি মেনে কংগ্রেসের যা কর্তব্য কংগ্রেস করেছে। “
দিল্লিতে গিয়েও সোনিয়া গান্ধীকে মমতার এড়িয়ে যাওয়া । এই নিয়ে সাংবাদিকদের তৃণমূল সুপ্রিমোর ঝাঁঝালো উত্তর। রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেসের বিধায়ক ভাঙিয়ে নেওয়া। দলীয় মুখপত্রে সময় সময় রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেসকে অযোগ্য বলে কটাক্ষ। এরপর সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরুর আগেই কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে তৃণমূলের গরহাজির থাকা । ধাপে ধাপে সম্পর্ক তিক্ত করতে করতে এবার কি তবে কংগ্রেসের সংশ্রব ত্যাগ করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ? দেশের রাজনৈতিক মহলের কাছে এটাই এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আচরণে অপমানিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ থাকলেও কংগ্রেসের অবস্থা এখন হয়েছে আশায় বাঁচে চাষার মতো । এক অধীর চৌধুরী ছাড়া কংগ্রেসের বাকি নেতারা এখনও তৃণমূলের অবহেলা মুখ বুজে সহ্য করে চলেছেন। হয়তো এখনও মমতাকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি বিরোধী মহাজোটের স্বপ্ন দেখছেন সোনিয়া-রাহুল । কিন্তু কংগ্রেস যতই সহনশীলতা দেখাক না কেন, তৃণমূল সুপ্রিমোর এক-একটি পদক্ষেপ বুঝিয়ে দিচ্ছে কংগ্রেসকে মাইনাস করে নিজের পরিকল্পনা নিয়েই জাতীয় স্তরে রাজনীতি করতে চান তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, কংগ্রেসকে ভেঙেই সর্বভারতীয় প্রেক্ষাপটে প্রধান বিরোধীদল হতে চাইছে তৃণমূল। এটাই মমতার ফাইনাল গেম প্ল্যান হলে কংগ্রেসের শত অনুনয়েও যে তিনি গলবেন না তা বলাই বাহুল্য।
আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে জোট গড়ে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল বিজেপির মুখোমুখি হতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তেমন কিছু হলে তৃণমূলকে বাদ রেখেই সমমনোভাবাপন্ন দলগুলিকে নিয়ে জোট গড়তে হবে কংগ্রেসকে । বিরোধী ভোট দুই শিবিরে ভাগ হয়ে গেলে আখেরে লাভ কার তা কারও অজানা নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কৌশলের পেছনে তাই বিজেপিরই মদত দেখতে পাচ্ছেন অধীর চৌধুরী।
Photo Credit- Twitter , FB page of M. Kharge and Mamata Banerjee.
To read this content also in Hindi click on Select Language option.
কনটেন্টটি পড়ে আপনার ভাল লাগলে কিছু অর্থ সাহায্য দিয়ে পোর্টালটির উন্নয়নে আপনি অবদান রাখতে পারেন donate now অপশনে ক্লিক করে–