সেন্ট্রাল হলে দেখা হলেই বিজেপিতে ঢোকানোর তাগাদা দিতেন মুকুলদা ,লিখলেন বাবুল
ডেস্ক রিপোর্ট : দলবদল নিয়ে ফেসবুকে মুকুল রায়কে ধুইয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় । বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর ষড়যন্ত্র করছে বলে তিনি মেনে নিতে পারেন নি – তৃণমূলে যোগদানের পর এমনই জানিয়েছেন মুকুল রায় । সোমবার নিজের ফেসবুক পেজে বেশ বড়সড় পোস্ট নামিয়ে সদ্য প্রাক্তন সতীর্থের অভিযোগের জবাব দিয়েছেন বাবুল । দলত্যাগের অজুহাত হিসেবে মুকুলদা এই ধরণের মিথ্যা কথা না বললেই পারতেন বলে মনে করেন আসানসোলের সাংসদ ।
বাবুল সুপ্রিয় জানিয়েছেন মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল । দলবদলের পরেও তা ভালই থাকবে । দেখা হলে সিনিয়র হিসেবে সম্মানও করবেন । কিন্তু ব্যক্তিগত সম্পর্ক দিয়ে রাজনীতি চলে না বলে মনে করেন বাবুল । তৃণমূলের টিকিটে রাজ্যসভায় সদস্য থাকার সময় মুকুল রায় সংসদের সেন্ট্রাল হলে দেখা হলেই কবে তাঁকে বিজেপিতে জয়েন করানো হচ্ছে এই কথা বলে তাড়া দিতেন বলে ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয় । শিষ্টাচারের খাতিরে সেই সময়কার সব কথা তিনি ভাঙবেন না বলে জানিয়েছেন বাবুল । এতদিন দলের কর্মী-সমর্থকদের পিঠে হাত বুলিয়ে রঙ পরিবর্তন করা মাত্রই সেই হাত দিয়ে কর্মী-সমর্থকদের পিঠে মুকুল রায় ছুরি মেরেছেন বলে অভিযোগ করেন বাবুল সুপ্রিয় । বাবুলের শেষ কথা – সময় সব হিসেব বুঝে নেবে ।
বাবুলের ফেসবুক পোস্ট –
বিজেপির কোন সর্বভারতীয় নেতা বাংলার বিজেপির নেতাদের বলেছিলেন, “মেরুকরণ বাড়িয়ে অস্থিরতা বাড়াতে”।চারদিকে যখন সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সন্ত্রাস ছড়িয়ে চূড়ান্ত নোংরামি করছে #টিএমসি, তখন মুকুল দা বিজেপিতে থেকে এই ধরনের মিথ্যা কথা প্রচার করছিলেন তোলাবাজ ভাইপোর সঙ্গে গোপন বৈঠক করে??? এটা মানতে পারছি না।
আর আজ যখন বিজেপির ছেলেদের উপর চারদিকে অত্যাচার হচ্ছে তখন সাদা পান্জাবিতে রক্তের দাগ ধুয়ে #টিএমসি’র সঙ্গে কোলাকুলি করছেন মুকুল দা! ওঁর মতো সিনিয়র নেতার কি এটা মানায়? না হয় আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতেন, বিজেপির বৈঠকে আসছিলেন না। আরও কয়েকদিন আসতেন না। তাতে কি মহাভারত অশুদ্ধ হত? কালই তো বাংলায় কোনও নির্বাচন নেই।
অনেক কথা মনে পড়ছে। রাজ্যসভার তৃণমূল সদস্য থাকাকালীন রোজ সিগারেটে সুখটান দিতে দিতে বলতেন, “কবে জয়েন করাবে তোমরা বিজেপিতে? সংগঠনটা বানাতে হবে তো! বেশিদিন কিন্তু টাইম নেই।” সংসদের সেন্ট্রাল হলে গল্প হত। শুধু শিষ্টাচারের খাতিরে তার বিস্তারিত আলোচনায় যাচ্ছি না।
দল বদল করেছেন কোনও অসুবিধা নেই। রাজনীতিতে এটা রোজকার ব্যাপার এটা মুকুল দার চেয়ে ভাল আর কেই বা জানেন? বিজেপির বিরুদ্ধে বলছেন বা বলবেন সেটাও স্বাভাবিক। কিন্তু ওঁর মতো একজন সিনিয়র এমন সম্পূর্ণ অসত্য কথা কেন বলছেন? যা সত্যি নয় তা বলে সাম্প্রদায়িক আগুন কেন জ্বালাচ্ছেন? আমার সঙ্গে ওনার ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুবই ভাল ছিল। এখনও সামনাসামনি দেখা হলে কখনই অসম্মানজনক কিছু বলব না- অনেক অনেক সিনিয়র উনি। কিন্তু ব্যক্তি-সম্পর্ক তো আর দলের ভাল-মন্দের উপরে হতে পারে না। বিশেষ করে যখন দলের তৃণমূলস্তরে এত কার্যকর্তার প্রাণের প্রশ্ন জড়িত – হ্যাঁ প্রাণই তো !! ভোট পরবর্তীকালে কতগুলি রাজনৈতিক খুন মমতাদিদির অনুপ্রেরণায় হয়েছে এবং হয়ে চলেছে তা কি জানেন না উনি ?
যে যুবক-যুবতী দলীয় কর্মীদের পিঠে হাত দিয়ে কথা বলেছেন এতদিন, সেই হাতের রং বদল করেছেন তাতে কোনও সমস্যা নেই। রাজনীতিতে এটা হয়েই থাকে। কিন্তু তাঁদের সেই পিঠেই ছুরি কেন মারছেন আজ? তাও সম্পূর্ণ অসত্য কথা বলে। এটা অন্যায়। বাংলার খুনের রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে এটা নির্মম এবং সময় কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তর চাইবে। এই জীবনেই কিন্তু মানুষ হিসাবে সব উত্তর – হিসাব মিলিয়ে দিয়ে যেতে হয় আমাদের !!