১২ এপ্রিল,২০২১ : রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা পরিস্থিতি পরিদর্শনে বৃহস্পতিবার শীতলকুচি সহ কোচবিহার জেলার বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শনে যাওয়ার কথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের । শুক্রবার অসমেও যাবেন রাজ্যপাল । ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার হয়ে অসমে আশ্রয় নেওয়া পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক কর্মীদের শিবির দেখতে যাওয়ার কথা জগদীপ ধনখড়ের। এই ঘটনায় চরমে রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী সংঘাত । রাজ্যপালের কোচবিহার সফর সরকারি বিধি ও রীতির পরিপন্থী বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
বুধবার রাজ্যপালের কাছে লেখা চিঠিতে তাঁর কোচবিহার সফর নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । রাজ্য প্রশাসনকে না জানিয়েই ধনখড় কোচবিহার সফরে যাচ্ছেন বলে চিঠিতে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপালের সফরের কথা তিনি সামাজিক মাধ্যমে জানতে পারেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । রাজ্যপালের এই আচরণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৯৯০ সালের ‘ম্যানুয়্যাল অফ প্রোটোকল অ্যান্ড সেরিমনিয়্যালস’-এর পরিপন্থী বলে জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিতে । মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি পাওয়ার পরেই পাল্টা কড়া চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যপাল জানান , সংবিধান মেনেই শীতলকুচি সহ কোচবিহার জেলার বিভিন্ন হিংসা কবলিত স্থান পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সংবিধান মেনে চলার যে শপথবাক্য তিনি নিয়েছেন তা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীশ ধনখড় ।
রাজ্যপালের ট্যুইট। |
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, আপনি যে অবস্থান নিয়েছেন আমি তাতে সম্মতি দিতে অপারগ । কারণ , তাতে প্রাথমিক অজ্ঞতার সঙ্গে সংবিধানের প্রতি আমার বিশ্বাসঘাতকতাই প্রতিপন্ন হবে । তাঁর কোচবিহার সফর সরকারি বিধি ও রীতির পরিপন্থী নয় বলেই চিঠিতে উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল । চিঠিতে জগদীপ ধনখড় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন , এটা ভেবেই আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি যে, আপনার মতো উচ্চতার একজন নেত্রী কীভাবে বলতে পারল রাজ্যপালকে সরকারের অনুমতি নিয়ে রাজ্য সফরে বেরোতে হবে ! ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার মানুষের পাশে এখনই দাঁড়ানোর সময় বলে চিঠিতে দাবি করেছেন রাজ্যপাল ।
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা রাজ্যপালের চিঠি। |
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক কতটা মধুর তা রাজনৈতিক মহলের অজানা নয় । ভোটে বিপুল আসন নিয়ে মমতার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পর রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত হ্রাস পাবে বলে মনে করেছিলেন অনেকে । কিন্তু ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় শুরু থেকেই সক্রিয় অবস্থান নেন জগদীপ ধনখড় । তৃতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের দিনই এ নিয়ে মমতাকে সতর্ক করে দেন রাজ্যপাল । এখন রাজ্যপালের কোচবিহার সফর ঘিরে ফের তুঙ্গে রাজ্য সরকার – রাজ্যপাল সংঘাত । ধনখড় রাজভবন থেকে বিদায় না হওয়া পর্যন্ত নবান্ন বনাম রাজভবন চাপান-উতর চলতেই থাকবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা ।