কলকাতা,২৭ মে,২০২১: বৃহস্পতিবারও জামিন হল না নারদ কান্ডে ধৃত চার নেতা-মন্রীর । শুক্রবার দুপুরে ফের মামলার শুনানি হবে কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে । ১৭ মে সকালে নারদ স্টিং অপারেশন মামলায় রাজ্যের দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম এবং বিধায়ক মদন মিত্রের পাশাপাশি প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই । ব্যাঙ্কশাল কোর্টের সিবিআই আদালতে ধৃতদের জামিন মিললেও সিবিআইয়ের আবেদনে সাড়া দিয়ে জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট । এর পর থেকেই আইনের ফেরে চার নেতা-মন্ত্রী ।
২১ মে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের ডিভিশন বেঞ্চ শেষ পর্যন্ত ধৃতদের অন্তবর্তীকালীন জামিন দিলেও গৃহবন্দী থাকার নির্দেশ দেয় । গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় চারজনকেই বাড়িতে সিসি ক্যামেরায় সিবিআইয়ের নজরদারির মধ্যে থাকতে বলা হয় । বাইরের কারও সঙ্গে দেখাসাক্ষাতেও তাঁদের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে । ডিভিশন বেঞ্চে রায় নিয়ে দুই বিচারপতির মতান্তরের জেরে জামিনের মামলার শুনানি নিয়ে ওই দিনই বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ।
নারদ মামলায় ধৃত চার নেতা-মন্ত্রীর জামিনের মামলার শুনানির জন্য কলকাতা হাইকোর্টে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল সহ পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা হলেও মামলাটি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই । ইতিমধ্যে বৃহত্তর বেঞ্চে মামলাটির একবার শুনানিও হয় । বুধবার সুপ্রিম কোর্ট মামলাটিকে শুনানির জন্য পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চেই ফিরিয়ে দিলে সিবিআই সুপ্রিম কোর্ট থেকে মামলা প্রত্যাহার করে নেয় । বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে ফের শুনানি শুরু হলেও দিনের শেষে জামিন নিয়ে কোনও ফয়সালা না হওয়ায় হতাশ চার নেতা-মন্ত্রীর আইনজীবীরা ।
গৃহবন্দী দশা কাটল না চার নেতার,শুক্রবার ফের শুনানি বৃহত্তর বেঞ্চে। |
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে নারদ মামলার শুনানি শুরু হতেই চার অভিযুক্তের জামিনের বিরোধিতা করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা । মামলাটি রাজ্য থেকে সরানোর আর্জি জানান তিনি । ১৭ মে দিনভর মন্ত্রীদের গ্রেফতারি নিয়ে যা হয়েছে এবং সিবিআই দফতরে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা উল্লেখ করে সিবিআইয়ের আইনজীবী অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র নয় মবতন্ত্র চলছে । মামলায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীকে যুক্ত করা হয়েছে বলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল আদালতে জানান । অভিযুক্তদের পক্ষে অভিষেক মনু সিংভি ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সওয়াল করেন । তাঁদের মক্কেলদের জামিন পাওয়ার অধিকার আছে বলে আদালতকে জানান সিংভি ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় । যেনতেন প্রকারে অভিযুক্তদের জামিন আটকে দেওয়াই সিবিআইয়ের লক্ষ্য বলে অভিযোগ করেন তাঁরা । শুভেন্দু অধিকারী ও মুকুল রায়কে কেন ডাকা হচ্ছে না, এই প্রশ্নও তোলেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ।
অভিযুক্তদের আইনজীবী দ্বয় জামিনের হয়ে জোর দাবি জানালেও বিচারপতিরা বিষয়টিকে অতটা হালকা ভাবে নিতে রাজি নন। জামিন নিয়ে সিবিআইয়ের উদ্বেগের বিষয়টিকেও মাথায় রাখতে হচ্ছে বিচারপতিদের । জামিন নিয়ে তাড়াহুড়োয় না গিয়ে মামলাটির ফের শুনানির জন্য সময় দিয়েছে বৃহত্তর বেঞ্চ । শুক্রবার দুপুর বারোটায় শুনানি । কাজেই তার আগে পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবেই গৃহবন্দী দশা কাটছে না সুব্রত-ফিরহাদ-মদন-শোভনের ।