বহরমপুর ,২০ এপ্রিল,২০২১ : এবারের ভোট বৈতরণী পার হতে মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এই দুই জেলাতেই ভোট শেষ দুই দফায় যথা আগামী ২৬ ও ২৯ এপ্রিল । ভোটে জিততে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মালদহ ও মুর্শিদাবাদই যে তৃণমূলের বড় ভরসা তার প্রমাণ মিলল মমতার কথাতেও । মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ ও ভগবানগোলা আসনের দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে নির্বাচনী সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ ও মালদহকে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। আপনাদের এখানে প্রত্যেকটা সিট জিততে হবে। অন্যান্য জেলার সাথে সাথে আপনাদের সাহায্য পেলে তবেই কিন্তু এবার আমরা সরকারটা গঠন করতে পারব । এই ক্ষেত্রে মুর্শিদাবাদের মানুষের একটা বড় ভূমিকা আছে । ‘
এদিন পরে সাগরদিঘী ও নবগ্রাম আসনের দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনেও সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী । মুর্শিদাবাদ জেলার প্রতিটি সভা থেকেই বাম ও কংগ্রেসের সমালোচনায় অনেকটা সময় ব্যয় করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপিএম ও কংগ্রেসকে বিজেপির দালাল বলতেও ছাড়েন নি তিনি। বাম-কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকির দলের জোটকে কটাক্ষ করে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘ আমি কোথাও কোথাও শুনছি ওই জোটের নামে ঘোঁট পাকানো চলছে । বিজেপির সবথেকে বড় দালাল এখন সিপিএম আর কংগ্রেস । মাথায় রাখবেন এটা । ‘ সংখ্যালঘু ভোট ভাগাভাগি হয়ে গেলে তৃণমূলের বিপদ , এই রাজনৈতিক অঙ্ক থেকেই জোটের বিরুদ্ধে মমতার এই বিষোদগার বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল । জোটকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকেই ভোট দেওয়া – সভায় এমনও দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভায় উপস্থিত জনতার সামনে তৃণমূল সুপ্রিমোর আকুল আবেদন , ‘ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে হলে সব ভোট তৃণমূলকেই দিন । এখানে ভাগাভাগি করবেন না দয়া করে । ভাবনা চিন্তা করে ভোটটা দেবেন । ‘ মমতার অভিযোগ , ‘ সিপিএম – কংগ্রেস আর একটা দল । জগাই মাধাই গদাই । এরা বিজেপিকে পুরোপুরি মদত দিচ্ছে । ‘ মুর্শিদাবাদ জেলায় সিপিএম ও কংগ্রেসের হার্মাদরা সবাই এখন বিজেপিতে গিয়ে জুটেছে বলেও সভায় আওয়াজ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী ।
সংখ্যালঘু ভোটে জোটকে ভাগ বসাতে না দেওয়াই মুর্শিদাবাদ জেলায় মমতার লক্ষ্য । |
বাড়ি থেকেই ভোটে নজর কোভিড আক্রান্ত দুই নির্বাচন কমিশনারের – তা নিয়েও কটাক্ষ তৃণমূল সুপ্রিমোর ! |
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সারা দেশের পাশাপাশি সংক্রমণ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গেও । এদিন বাংলায় কোভিড পজিটিভ কেস বৃদ্ধির জন্য বিজেপির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দিকেও আঙ্গুল তুলে দিলেন মমতা । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘ দেড় লক্ষ পুলিশ বাইরে থেকে এসেছে । বিজেপির হয়ে কাজ করতে বাইরে থেকে এক লক্ষ গুন্ডা এসেছে । তারা কোভিড ছড়িয়ে পালিয়ে যাচ্ছে । ‘ স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূলনেত্রীর এই বক্তব্যকে ভালভাবে নেন নি বিরোধীরা । কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে মানুষের মনে অসন্তোষ তৈরি করতেই মমতা এমন মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব । দলের হয়ে কাজ করতে বাইরের প্রদেশ থেকে এক লক্ষ কর্মী এসেছে – মমতার এই দাবিকেও সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে নস্যাৎ করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপি ।