এনএনডিসি পলিটিক্যাল ডেস্ক, ৮ এপ্রিল,২০২১ : ভোট পরবর্তী পশ্চিমবঙ্গে ত্রিশঙ্কু বিধানসভা হলে তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ার একটা জল্পনা জোটসঙ্গী কংগ্রেস জিইয়ে রাখলেও ওই পথে হাঁটতে নারাজ বামেরা । বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই সম্ভাবনা খারিজ করে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র । সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘ আমরা বারবার বলেছি । নতুন কথা কিছু নয়। ভোট পরবর্তী পরিস্থিতিতে তৃণমূল এবং বিজেপি – কেউই যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায় , তাহলে ওই দুই দল মিলে সরকার গঠন করবে । বিজেপি-তৃণমূলের সরকার । সেই জন্যই মানুষের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে এদের শক্তি এমন ভাবে কমানো দরকার যাতে দুই দল মিলেও সরকার গড়তে না পারে । ‘ তৃণমূল ও বিজেপিকে একই মুদ্রার দুই পিঠ বলে মনে করেন সূর্যকান্তবাবু । পরিস্থিতি তেমন হলে সরকার গঠনে সমর্থন দেওয়ার প্রশ্নে তাঁরা দু’দলের থেকেই দূরত্ব বজায় রাখবেন বলে সাংবাদিক সম্মেলনে জানান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক ।
অধীরের উল্টো সুর সূর্যকান্তের গলায় : ভোট পরবর্তী সময়ে তৃণমূলকে সমর্থনের জল্পনা ওড়াল সিপিএম । |
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ সিপিএমের হার্মাদরাই এখন বিজেপিতে ঢুকে তৃণমূলের লোকদের মারছে । এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে সূর্যকান্ত মিশ্রের জবাব , ‘ ওনার কথার কোনও জবাব দিই না। ওনার ডিএনএতেই আছে মিথ্যা কথা বলা। আমরা ছোটবেলায় শিখেছি সদা সত্য কথা বলিবে । আর উনি শিখেছেন সদা মিথ্যা কথা বলিবে । ‘
কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যদের ঘেরাও করার যে ডাক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন সাংবাদিক সম্মেলনে তার তীব্র নিন্দা করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক । স্বখাত সলিলে পড়ে মমতা এখন নৈরাজ্যের দিকে বাংলাকে ঠেলে দিতে চাইছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি । সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন , ‘ এসব বলে নৈরাজ্যের দিকে তিনি রাজ্যকে নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন । তিনি বিরোধী থাকার সময়েও একই কাজ করেছেন । এখন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন । এখনও তাই করছেন । মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসে এইসব কথা বলা যায় না । ‘ সূর্যকান্তবাবু আরও বলেন , ‘ এরপর যদি কেউ বলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে , রাজ্যর পুলিশকে ঘেরাও করব । সামলাতে পারবেন তিনি । ‘
কলকাতা প্রেস ক্লাবে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র । |
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপির সঙ্গে লড়াই করার দম নেই বলেও কটাক্ষ করেন সূর্যকান্ত মিশ্র । সূর্যকান্তবাবু বলেন, ‘ তিনি বিজেপির সঙ্গে লড়তে পারবেন না। লড়বেন না। কারণ তাদের মধ্যে বোঝাপড়া আছে। বিজেপির বিকল্প একমাত্র আমরা সংযুক্ত মোর্চাই দিতে পারি । ‘ সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের ভাষায় – ‘ তৃণমূলকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া । বিজেপিকে ভোট দেওয়া মানে তৃণমূলকে ভোট দেওয়া । ‘
বিভিন্ন নির্বাচনী সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে চলেছেন, ‘ দুশোর বেশি সিট না পেলে তিনি সরকার গঠন করতে পারবেন না । তাঁর দলের গদ্দারদের বিজেপি টাকা দিয়ে কিনে নিতে পারে । ‘ এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের কটাক্ষ, ‘ উনি নিজেই তো বলেছেন তাঁর দলে কিছু গদ্দার আছে । যারা বিজেপিতে চলে যাবে । তাহলে তাঁকে ভোট দিয়ে মানুষের লাভটা কী ? ‘
নন্দীগ্রামে মমতার পরিস্থিতি নড়বড়ে বলেই মনে করেন সূর্যকান্ত মিশ্র । তিনি বলেন , ‘ নন্দীগ্রামে তো দেখলাম কীভাবে অসহায়ের মতোন হুইল চেয়ারে বসে একটি বুথেই দু’ঘন্টা কাটিয়ে দিলেন । ‘ নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন অসহায়ের মতো রাজ্যপালের কাছে আর্তনাদ করছিলেন তখন জোটের প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় তিরিশটি বুথে টহল দিয়ে এজেন্ট বসিয়ে এসেছেন বলে কটাক্ষ করেন সূর্যকান্তবাবু ।