কুলপির সভায় আমফান , ফণী , আয়লা এমনকি 'সুনামি'তেও সুন্দরবনবাসীদের পাশে থাকার দাবি মমতার ! - nagariknewz.com

কুলপির সভায় আমফান , ফণী , আয়লা এমনকি ‘সুনামি’তেও সুন্দরবনবাসীদের পাশে থাকার দাবি মমতার !


পলিটিক্যাল ডেস্ক,৩ এপ্রিল,২০২ : আমফান , ফণী , আয়লা এমনকি সুনামি থেকেও তিনিই সুন্দরবনবাসীদের বাঁচিয়ে ছিলেন বলে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । শনিবার দুপুরে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কুলপিতে নির্বাচনী সভায় ভাষণ দেওয়ার সময় এই দাবি করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সভায় মমতা বলেন , ‘ আমফান থেকে , ফণী থেকে শুরু করে সব কিছু থেকে আপনাদের আমরা বাঁচিয়েছি । সুনামি হয়েছিল আপনারা দেখেছিলেন । আয়লা হয়েছিল আপনারা দেখেছিলেন । পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোন‌ও সাহায্য করে নাই । আমি নিজে আয়লাতে ছুটে এসেছিলাম প্রথম , রেলমন্ত্রী হিসেবে । মনে আছে ? ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আমার সঙ্গে ছিল । ‘ আমফানের সময় তিনি নবান্নে বসে সারারাত পাহারা না দিলে পশ্চিমবঙ্গে অসংখ্য জীবনহানি ঘটত বলেও মনে করেন মমতা । মুখ্যমন্ত্রী সেই রাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, আমফানের দিন আমি যদি নবান্নে বসে সারারাত পাহারা না দিতাম তিনদিন ধরে । তাহলে মা-ভাই-বোনেরা বলুন তো কত লোক মারা যেত । আমি যখন নবান্নে বসে আমফানের ওই ল্যাজটা নবান্নে । চোখটা চলে এসেছে আপনাদের দিকে । কী একটা অবস্থা ! নবান্নটা মনে‌ হচ্ছে থরথর করে কাঁপছে । এক্ষুনি ভেঙে পড়বে । ‘ 

দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির সভায় ভাষণ দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । 

২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর সকালে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রার কাছে ভারত মহাসাগরের তলদেশে প্রবল ভূমিকম্পের জেরে সৃষ্ট সুনামিতে ইন্দোনেশিয়া , থাইল্যান্ড , শ্রীলঙ্কা এবং ভারত সহ টি দেশের উপকূলভাগে সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী লক্ষ ২৭ হাজার ৮৯৮ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল । তামিলনাড়ুর চেন্নাই উপকূলে সুনামির তান্ডবে হাজার মানুষের মৃত্যু হলেও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় এর কোন‌ও প্রভাব‌ই পড়ে নি । ২০০৪ এর সুনামির সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কীভাবে সুন্দরবনের দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সেই হিসেব মেলাতে পারছেন না কেউই । 

২০০৪ এর ২৬ ডিসেম্বর সকালে সুনামির ঢেউ আছড়ে পড়েছিল তামিলনাড়ুর উপকূলে ।

বিভিন্ন জনসভা থেকে মোদী-শাহ অভিযোগ করে চলেছেন , ‘ আমফানের ত্রাণে কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো কোটি কোটি টাকা জনগণের মাঝে না বিলিয়ে আত্মসাৎ করে নিয়েছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা । ‘ কুলপির সভায় এই অভিযোগ অস্বীকার করে মমতার দাবি, আমফানের সময় একমাত্র তাঁর সরকার‌ই আর্ত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছিল । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ আপনারা দেখেছেন আমফানে এত লক্ষ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হল । আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত ২০ লক্ষ বাড়ি আমরা করে দিয়েছি । ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের টাকা দিয়েছি । ধ্বংস হয়ে যাওয়া বিদ্যুতের পরিকাঠামো ঠিক করেছি । ভাঙা রাস্তাঘাট-কালভার্ট ঠিক করে দিয়েছি । ‘ যদি কেউ আমফানের ক্ষতিপূরণ না পেয়ে থাকেন তবে তাদের টাকা দিয়ে দেওয়া হবে ‌বলে আশ্বাস দেন তিনি । মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ যদি কেউ আমফানের টাকা না পেয়ে থাকেন । যদি জেনুইন কেস হয় । আমার বলা আছে । আপনারা সবাই পেয়ে যাবেন । আপনাদের চিন্তা করার কোন‌ও কারণ নেই । ‘ 

ঘটনা হল রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় শাসকদলের বিরুদ্ধে আমফান দুর্নীতিকেই প্রধান ইস্যু করেছে বিজেপি । বিজেপি সরকারে এলে আমফান ঘোটালায় জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হবে বলে মানুষকে আশ্বস্ত করেছেন অমিত শাহ । এই পরিস্থিতিতে সুন্দরবন এলাকায় ভোট চাইতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমফান নিয়ে রক্ষণাত্মক স্ট্যান্ড নিয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা ।

ভিডিও-কুলপিতে মমতার ভাষণের অংশবিশেষ

Picture Courtesy – Indian Express ( for picture of Tsunami )


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *