নাগরিক নিউজ: দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশে স্বস্তিতে রাজ্য বিজেপি । শুক্রবার কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং পবন সিং সহ তিন বিজেপি নেতার দায়ের করা একটি মামলার শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আগামী জানুয়ারি মাসে মামলাটির পরবর্তী শুনানির আগে পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের কোনও বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে দমনমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না । সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্বাভাবিক ভাবেই উল্লসিত রাজ্য বিজেপির নেতারা । এদিন কলকাতায় বিজেপির হেস্টিংস দফতরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়ে বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় অভিযোগ করেন, ‘এই রাজ্যে যারাই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেওয়া হচ্ছে । ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংকে পাশে বসিয়ে মুকুল রায় বলেন, ‘আমি , অর্জুন , অর্জুনের ছেলে যারাই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছি তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে গেছে । অর্জুনের বিরুদ্ধে ৬৫টার ওপর মামলা । আমার ওপর ৫৫টা মামলা ।‘
হেস্টিংসে বিজেপির দফতরে সাংবাদিক সম্মেলনে মুকুল রায় |
অমিত শাহের বাংলা সফরের একেবারে প্রাক্কালে এদিন কলকাতায় মুকুল রায়ের হাত থেকে বিজেপির পতাকা গ্রহণ করলেন পূ্র্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি ও বর্তমান সদস্য শেখ হারউন রশিদ এবং সুলতানা বেগম সহ এক ঝাঁক সংখ্যালঘু তৃণমূল নেতাকর্মী । মুকুলবাবু বলেন, ‘ বাংলায় রাজনৈতিক হিংসায় ১৩৯ জন বিজেপি কর্মী নিহত হয়েছেন । বাংলায় গণতন্ত্রের শাসন নেই । গণতান্ত্রিক বাতাবরণ নেই । এখন কোনও জাত নেই , ধর্ম নেই , বর্ণ নেই । বাংলার মানুষের এখন একটাই লক্ষ্য শুধু কীকরে মমতার সরকারের , তৃণমূল সরকারের পতন ঘটানো যায় । ‘ এই জন্যই প্রতিদিন মানুষ দলে দলে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসছে বলে দাবি করেন তিনি ।
শাসকদলের ভাঙন দেখে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির কটাক্ষ, ‘ আমার তো হালহকিকত দেখে মনে হচ্ছে এবার তৃণমূলের একশোও হবে না । যে হালহকিকত চলছে একশোও হবে না । একশো হওয়া বিপদ আছে । ‘
আসানসোলের সদ্য প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিজেপিতে যোগদানের বিরুদ্ধে বাবুল সুপ্রিয়োর প্রকাশ্য বিরোধীতাকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ মুকুল রায় । সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুকুলবাবু বলেন, ‘ কারোর কারোর ব্যক্তিগত মত হতে পারে । বাবুল বাবুলের মত বলতেই পারে । বাবুলের মত বললে তো কিছু এসে যাবে না।’
ঝানু বিজেপি নেতার এই মন্তব্য যথেষ্টই ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এখন দেখার অমিত শাহের দু’দিনের বঙ্গসফরের মধ্যেই সদ্য তৃণমূলত্যাগী যে যে নেতারা ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মফুলের ঝান্ডা ধরবেন তাদের তালিকায় জিতেন্দ্র তিওয়ারিরও নাম থাকে কিনা ।
জিতেন্দ্র তিওয়ারি প্রশ্নে বাবুল সুপ্রিয়র ক্ষোভ নিয়ে মুকুল রায়ের প্রতিক্রিয়া ইঙ্গিতবাহী |
Photo courtesy – official fb pages of BJP-West Bengal , Babul Supriya and Jitendra Tiyari